মেয়াদ বাড়ছে না ডিএমপি কমিশনারের, স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন কে?

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বর্তমান কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের মেয়াদ বাড়ছে না। আগামী ২৯ অক্টোবর অবসরে যাচ্ছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবার) এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তার স্থলাভিষিক্ত কে হচ্ছেন তা জানতে এখন চলছে জোর আলোচনা। 

সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ডিএমপি’র ৩৪তম কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেন পুলিশের অষ্টম ব্যাচের সদস্য মোহা. শফিকুল ইসলাম। আগামী ২৯ অক্টোবর তার চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

বর্তমান কমিশনারকে অবসর দেওয়ার প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে নতুন কমিশনার কে হতে পারেন তা নিয়ে জোর আলোচনা চলছে। নতুন কমিশনার হিসেবে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে পুলিশের ১২, ১৫ ও ১৭তম ব্যাচের কয়েকজন কর্মকর্তার নাম। এর মধ্যে পুলিশ সদর দফতরে কর্মরত ১২তম ব্যাচের অতিরিক্ত আইজিপি এসএম রুহুল আমিন, একই ব্যাচের অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন, একই ব্যাচের অতিরিক্ত আইজিপি মো. আতিকুল ইসলাম, হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মল্লিক ফখরুল ইসলাম, এন্টি-টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. কামরুল আহসান, ১৫তম ব্যাচের পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম ও ১৭তম ব্যাচের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান আলোচনায় রয়েছেন।

সম্প্রতি মোহা. শফিকুল ইসলামকেই ডিএমপি কমিশনার হিসেবে নতুনভাবে একবছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ার গুঞ্জন শোনা গেছে। এ সংক্রান্ত একটি ফাইল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জনপ্রশাসন হয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ না দিয়ে সরকার তাকেসহ র‌্যাবের ডিজি অতিরিক্ত আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেড-১ পদমর্যাদা দেয়।

জানা গেছে, আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে মোহা. শফিকুল ইসলামকে আগামী ২৯ অক্টোবর থেকে অবসর প্রদানের কথা উল্লেখ রয়েছে। প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, পুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত আইজিপি, গ্রেড-১) মোহা. শফিকুল ইসলামকে বয়স ৫৯ বছর পূর্ণ হওয়ায় সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ অনুযায়ী আগামী ২৯ অক্টোবর চাকরি থেকে অবসর দেওয়া হলো। তিনি বিধি অনুযায়ী ও অবসরোত্তর ছুটিকালীন সুবিধাদি পাবেন।’

ডিএমপি সূত্র জানায়, ১৯৮৯ সালের ২০ ডিসেম্বর এএসপি হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেন মোহা. শফিকুল ইসলাম। তার গ্রামের বাড়ি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায়। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। কর্মজীবনে তিনি নারায়ণগঞ্জ, পটুয়াখালী, সুনামগঞ্জ ও কুমিল্লা জেলায় পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি ও ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ছিলেন। অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার পর তিনি এন্টি-টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান, পুলিশ সদর দফতরের এইচআরএম শাখার প্রধান এবং সিআইডি প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের মন্তব্য, ‘পুলিশের ওপরের দিকে পদের সংখ্যা কম। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হলে তুলনামূলক অধস্তন কর্মকর্তাদের পদোন্নতি পেতে বেগ পেতে হয়। এতে শৃঙ্খল বাহিনীর সদস্যদের মনোবল ভেঙে যায়। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হওয়ায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ থেকে সরে এসেছে সরকার।’