হাক্কা চাইনিজের স্বাদে...

মচমচে নুডলসে কামড় দিলেই স্বাদ মিলবে ভেতরের নরম চিংড়ির। মজাদার এই আইটেইমটির নাম ‘র‍্যাপড প্রন।’ এটি খেতে চাইলে আপনাকে ঢুঁ মারতে হবে বনানীর হাক্কা ঢাকা রেস্টুরেন্টে।

হাক্কা ঢাকা রেস্টুরেন্ট

নাম শুনে দ্বিধান্বিত হয়ে অনেকে ঢাকাইয়া খাবার ভেবে বসলেও এটি আসলে পুরোদস্তুর চাইনিজ রেস্টুরেন্ট। ব্যতিক্রমী নামের এই রেস্টুরেন্টটির যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালের জুন মাসে, একেবারে ছোট্ট পরিসরে। রেস্টুরেন্টের অন্যতম স্বত্বাধিকারী রাফি জাহেদ জানালেন, এটি এক ধরনের ইন্ডিয়ান চাইনিজ। একদা ভারতে কিছু চাইনিজ বংশোদ্ভূত শুরু করেছিলেন খাবারের ব্যবসা। তবে ঝাল-মসলা ছাড়া আধা কাঁচা খাবার স্বাভাবিকভাবেই পছন্দ করেননি ভারতের মানুষ। তখন চাইনিজ খাবারের সঙ্গেই ঝাল ও মসলা দিয়ে তারা নতুন ধরনের খাবার তৈরি করেন যার নাম হাক্কা চাইনিজ। দেখতে দেখতে ভারতবাসীদের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই খাবার।

এই প্ল্যাটারটি খেতে পারবেন দুই জন

এত খাবার থাকতে হাক্কা চাইনিজ নিয়েই কেন রেস্টুরেন্ট শুরু করলেন? রাফি জাহেদ বলেন, ‘আমরা পরিবারের মোট ৩ সদস্য মিলে শুরু করি হাক্কা ঢাকা। আমরা আসলে সবাই ভোজনরসিক। নতুন নতুন খাবার খেতে পছন্দ করি। খাবার নিয়ে নতুন কী করা যায় সেটা নিয়ে চিন্তাভাবনা থেকেই হাক্কা চাইনিজের কনসেপ্ট মাথায় আসে। আমাদের দেশে চাইনিজ খাবার মানেই সাদামাটা একটি ভেজিটেবল, কড়া করে ভাজা চিকেন ফ্রাইয়ের সঙ্গে এগ ফ্রাইড রাইস। প্রচলিত এই চাইনিজ খাবারের কনসেপ্ট থেকে বের হয়ে ইন্ডিয়ান চাইনিজের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই শুরু হয় হাক্কা ঢাকার পথচলা। যেহেতু ঝাল খাবার আমরা পছন্দ করি, সেহেতু হাক্কা চাইনিজ মানুষ সাদরে গ্রহণ করবে- এমনটাই ছিল প্রত্যাশা। আনন্দের ব্যাপার হচ্ছে, প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে শতভাগ।’

হাক্কা ঢাকা রেস্টুরেন্ট

হাক্কা ঢাকা শুরুতে এনেছিল মাত্র দুটি প্ল্যাটার। চিকেন হাক্কা উইংগস, এগ ফ্রাইড রাইস, হাক্কা নুডলস, চিকেন ক্যাশিউ নাট, চিলি গার্লিক প্রন, মঙ্গোলিয়ান বিফ ও সফট ড্রিংকস নিয়ে প্ল্যাটার এ। প্ল্যাটার বি’তে রয়েছে চিকেন অ্যান্ড চিজ অন্থন, এগ ফ্রাইড রাইস, হাক্কা নুডলস, চিকেন উইথ মাশরুম, ড্রাই চিলি বিফ, সিচুয়ান ও কোল্ড ড্রিংক। এ দুটি প্ল্যাটার প্রতিটি ২ জনের জন্য নিলে খরচ পড়বে ১ হাজার ৩০০ টাকা ও ৪ জনের জন্য ২ হাজার টাকা। সেই শুরু থেকেই এই একই দামে ক্রেতাদের কাছে সুস্বাদু প্ল্যাটার দুটি দিচ্ছে হাক্কা ঢাকা। তুমুল জনপ্রিয় এই প্ল্যাটারগুলোর পাশাপাশি নতুন নতুন আরও বেশকিছু আইটেমও নিয়ে এসেছে তারা। সি ফুড প্ল্যাটার, মেগা প্ল্যাটারের পাশাপাশি রয়েছে স্যুপসহ নানান ধরনের অ্যাপিটাইজার। রাজি জানান, এখানে মূলত চাইনিজ খাবারগুলোর স্বাদেই মসলার ব্যবহারে নিয়ে আসা হয়েছে নতুনত্ব।

র‍্যাপড প্রন

হাক্কা ঢাকার আরেকটি জনপ্রিয় আইটেম হচ্ছে র‍্যাপড প্রন। হাক্কা ঢাকার নিজেদের প্রস্তুত করা চমৎকার এই আইটেমটির স্বাদ মুখে লেগে থাকবে অনেকদিন।

হাক্কা ঢাকার খাবারের প্রশংসা করেন নিয়মিত ক্রেতারা। যারা একবার খেতে আসেন, তারা আবারও ফিরে আসবেন- এমনটাই বিশ্বাস করে হাক্কা ঢাকা পরিবার। কারণটা শুধু খাবারের স্বাদ নয়, একদল কর্মী সবসময়ই নিবেদিত আগত ক্রেতাদের সুবিধা অসুবিধার দিকে লক্ষ রাখার জন্য। রাফি জাহেদ বলেন, ‘আমাদের কাস্টমার সার্ভিস ও কোয়ালিটিই হচ্ছে সাফল্যের মূলমন্ত্র। আমরা চাই না কোনও ক্রেতা এখান থেকে অসন্তুষ্টি নিয়ে ফিরে যান।’

হাক্কা চাইনিজ মানেই মসলা ও ঝালের চমৎকার স্বাদ...

গল্প শেষে এবার খাওয়া-দাওয়ার পালা! ঝরঝরে ফ্রাইড রাইসের সঙ্গে চিলি গার্লিক প্রনের ঝাল ঝাল স্বাদটা উপভোগ করতে না করতেই মঙ্গোলিয়ান বিফের ঝাঁঝালো স্বাদটা দিয়ে গেল অন্যরকম ভালো লাগা। চিকেন ক্যাশিউ নাট সালাদটিও বেশ মুখরোচক।   

বনানী ও উত্তরাতে দুটি শাখা রয়েছে হাক্কা ঢাকার। খুব শীঘ্রই ধানমণ্ডিতে হাক্কা ঢাকাকে নিয়ে আসার ইচ্ছে আছে বলে জানালেন রাফি।

ছবি: সাজ্জাদ হোসেন 

/এনএ/