ঘুরে আসুন কাশফুলের রাজ্য থেকে

মহাকবি কালিদাস শরৎ বন্দনায় বলেছিলেন ‘প্রিয়তম আমার, ঐ চেয়ে দেখ, নব বধূর ন্যায় সুসজ্জিত শরৎ কাল সমাগত।’ তিনি ‘ঋতুসংহার’ কাব্যে আরও লিখেছেন ‘কাশ ফুলের মতো যার পরিধান, প্রফুল্ল পদ্মের মতো যার মুখ, উন্মত্ত হাঁসের ডাকের মতো রমণীয় যার নূপুরের শব্দ, পাকা শালি ধানের মতো সুন্দর যার ক্ষীণ দেহলতা, অপরূপ যার আকৃতি সেই নববধূর মতো শরৎকাল আসে।’

উত্তাল বর্ষার পর আগমন ঘটে শুভ্র ঋতু শরতের। নীল আকাশে সারি সারি সাদা মেঘ উড়ে বেড়ায় এলোমেলো। আকাশের মেঘ যেন পেঁজা তুলোর মতো নেমে আসে ধরণীতে, কাশফুল হয়ে!

শুভ্রতার ছোঁয়া কাশবনে

নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল, শুকনো রুক্ষ এলাকা, পাহাড় কিংবা গ্রামের কোনও উঁচু জায়গায় কাশের ঝাড় বেড়ে ওঠে। তবে নদীর তীরেই এদের বেশি জন্মাতে দেখা যায়। এর কারণ হল নদীর তীরে পলিমাটির আস্তর থাকে এবং এই মাটিতে কাশের মূল সহজে সম্প্রসারিত হতে পারে। বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই কাশফুল দেখতে পাওয়া যায় পালকের মতো নরম সাদা কাশফুল।

শরতের বিকেলে মনকে প্রফুল্ল করতে ঘুরে আসতে পারেন কাশবন থেকে। কাশফুলের নরম ছোঁয়ায় এক স্নিগ্ধ বিকেল কাটাতে এবং নগরজীবনের ব্যস্ততার ফাঁকে একটু শান্তির খোঁজে যেতে পারেন ঢাকার আশেপাশের কাশবনে।

জেনে নিন ঢাকা ও এর আশেপাশে কোথায় কোথায় পাবেন কাশবন-

বসুন্ধরা ৩০০ ফিট
কুড়িল বিশ্বরোড থেকে পূর্বাচল যেতে হয় ৩০০ ফিট রাস্তা ধরে। এই রাস্তার দুই ধারেই রয়েছে অসংখ্য কাশবন। চাইলে হেঁটে হেঁটেই ঘুরে দেখা যায়। রিক্সা করেও ঘুরতে পারেন। সেক্ষেত্রে ঘন্টায় ১০০ টাকা করে ঠিক করতে পারেন রিকশা।

আফতাবনগর
রামপুরার বনশ্রীর আফতাবনগর প্রায় সকলের কাছে অতি পরিচিত জায়গা। ঢাকার যেকোনও প্রান্ত থেকে রামপুরা ব্রিজে নামলেই দেখা যাবে আফতাবনগর।

কাশফুল

দিয়াবাড়ি
ঢাকার কাছে খোলা বাতাস খাওয়ার আরেক জায়গার নাম উত্তরা দিয়াবাড়ি। এখানেও প্রচুর কাশবন রয়েছে। উত্তরা হাউজবিল্ডিং নেমে লেগুনা কিংবা অটোরিক্সা নিয়েই যাওয়া যায় দিয়াবাড়ি।

বছিলা ব্রিজ
মোহাম্মদপুর বেড়িবাধ সংলগ্ন বছিলা ব্রিজ যেতে রাস্তার দু’ধারে দেখা মেলে অসংখ্য কাশফুলের।

কেরানীগঞ্জ
বাবুবাজার বুড়িগঙ্গা সেতু অতিক্রম করে ঢাকা-মাওয়া হাইওয়ে ধরে যেতে থাকলে দেখা পাওয়া যাবে কাশবন। এখানে কাশবনের পরিমান এতই বেশি যে পুরো এলাকা কাশফুলে সাদা হয়ে থাকে।

কাশফুল বেশিদিন থাকে না, তাই কাশফুলের ছোঁয়া পেতে আজই চলে যান আপনার সুবিধা মতো যেকোনও জায়গায়।

 

/এনএ/