চিনে নিন খাঁটি মুক্তা

মুক্তা

 

সাজপ্রিয় মেয়েরা সবসময় একটু ভিন্নতা পছন্দ করে। পোশাকেই হোক আর গয়নাতেই হোক চলতি ফ্যাশন ধরে রাখতে তারা সচল থাকে। আবার ভবিষ্যৎ ফ্যাশনের খোঁজ-খবরেও পিছিয়ে থাকে না।

রকমারি পোশাকের পাশাপাশি গহনার প্রতি আকর্ষণ মেয়েদের আদিকাল থেকেই। তবে ইদানিং ভারী সোনার গহনা পরার চাহিদা খুব একটা নেই। সে ক্ষেত্রে মুক্তার গয়না তার পছন্দের জায়গা ধরে রেখেছে আগের মতোই। বলতে গেলে মুক্তার গয়না এখন ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে।

হাল ফ্যাশনের গয়নার তালিকায় মুক্তার গয়না ফিরে এসেছে নতুনরূপে। এতে আভিজাত্যের প্রকাশ ঘটে। চাহিদার কারণে বর্তমানে কৃত্রিম উপায়েও এর চাষ হয়।

তবে খাঁটি মুক্তা পাওয়া একটু কষ্টকর। খাঁটি মুক্তা কীভাবে তৈরি হয় এটা হয়তোবা অনেকের অজানা। সাগরের নিচে কুসুম গরম বালুর বিছানায় বাস করে ঝিনুক। সেখানে খাদ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে আবার অনেক সময় নড়াচড়া ও পানির স্রোতে বাইরের কোনও বস্তু, সাধারণত বালুকণা ঢুকে পড়ে ঝিনুকের পেটে। বালুকণা বাইরে বেরোতে না পারায় ঝিনুকের পেটে দানা বাঁধে। ঝিনুকের শরীর তখন অস্বস্তি এড়াতে এই বস্তুর চারদিকে ছড়াতে শুরু করে এক ধরনের তরল আঠালো বস্তু। ক্যালসিয়াম কার্বোনেটের অতি পাতলা এ স্তর ক্রিস্টালের মতো করে অনুপ্রবেশকারী বস্তুটির গায়ে আস্তরণ ফেলতে শুরু করে। বেশ কয়েক বছর ধরে এই প্রক্রিয়া চলতে থাকে। একসময় তা মুক্তায় পরিণত হয়।

অন্য যে কোনো মণির মতো কয়েকটি মুক্তা এখনো ইতিহাস প্রসিদ্ধ, যেটা হাতে পেতে বিত্তবানরা উদগ্রীব। এক ইঞ্চি লম্বা লাপেরে গ্রিনা এমনই একটি মুক্তা যেটা কয়েকশ’ বছর ইউরোপের অভিজাতদের হাতবদল হয়ে ১৯৯৬ সালে ঠিকানা পায় এলিজাবেথ টেলরের সিন্দুকে। রিচার্ড কর্টন এক বিশেষ মুহূর্তে লিজকে দিয়েছিলেন তার এই ভালোবাসার উপহার। মুদ্রার অংকে সেকালে তার এ ভালোবাসার মাশুল পড়েছিল ৩৭ হাজার ডলার।

পৃথিবীতে সাদা মুক্তার চাহিদা বেশি হলেও রঙিন মুক্তার আকর্ষণও কম নয়। কৃত্রিমভাবে ইদানীং রঙিন মুক্তার চাষও হচ্ছে। ইদানীং ভারত ও বাংলাদেশে মুক্তার চাষ শুরু হয়েছে। বড় লহরের মালা ২ হাজার ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকা। ভারী সেট ১২ থেকে ৩০ হাজার টাকা, আংটি ৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকা। এদেশে মুক্তা আসে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড থেকে। বর্তমানে কৃত্রিম মুক্তার ভিড়ে খাঁটি মুক্তা প্রায় হারিয়ে যাওয়ার পথে।

মুক্তা চিনতে যেসব বিষয় জানা দরকার:

১) খাঁটি মুক্তা আগুনে পোড়ে না।

২) নকল মুক্তায় দাঁত দিয়ে চাপ দিলে দাগ বসে যায়।

৩)ব্ল্যাক মুক্তা কখনোই আসল হয় না।

৪)আসল মুক্তায় থাকে ঝিনুকের মতো ঝলমলে আভা।

৫)মুক্তা যত বড় হবে তত ভালো।

৬)মুক্তার গহনা সহজে নষ্ট হয় না।

যত্ন : মুক্তা ও সোনার গহনা কখনো একসঙ্গে রাখবেন না।

খোলামেলা জায়গায় রাখুন।

গহনা যত পরবেন ততই ভালো থাকবে। শরীরের ময়েশ্চারাইজার মুক্তার জন্য ভালো।

প্রতি বছর মুক্তার সুতা বদলে নিন। নাইলন বা সিল্কের সুতায় মালা গাঁথবেন।

পানিতে ভেজালে এটি নষ্ট হয় না।

/এফএএন/