মহাবালিপুরাম স্থানটি দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের কাঞ্চিপুরাম জেলায় অবস্থিত। যা তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাই থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে। ইতিহাস বলে মহাবালিপুরামের উল্লেখ আছে টলেমির সময়কার পেরিপ্লাস পুস্তকে, তা হবে খ্রিস্টপূর্ব কয়েকশত বছর আগে থেকে। মহাবালীপুরাম সেই সময় থেকেই দক্ষিণ ভারতের বাণিজ্যিক শহর হিসেবে পরিচিত। খ্রিস্টপূর্ব কয়েকশ বছর আগের চীন ও রোমান মুদ্রার সন্ধান এটাই প্রমাণ করে যে মহাবালিপুরাম একটি সমৃদ্ধশালী জনপদ ছিল।
মহাবালিপুরাম পৌছতে সড়কপথে ঢাকা থেকে কোলকাতা হয়ে ট্রেন ধরে যেতে হয় চেন্নাই, বিমানেও কোলকাতা থেকে চেন্নাই যাবার ব্যবস্থা আছে। চেন্নাই থেকে বাসে করে মহাবালিপুরাম যেতে সময় লাগে এক ঘন্টা।
ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের অন্তর্ভুক্ত এই দর্শনীয় স্থানটি অনেকে এক দিনের সফরেই দেখে ফেলতে পারেন। আমার মত খুতখুতে দর্শনার্থীর যেন অল্পতে প্রাণ ভরেনা। তাই আমি তিন দিনের ট্রিপ ঠিক করলাম। হোটেল আগে থেকেই অনলাইনে বুক করে রেখেছিলাম। সমুদ্রতীরে বিশাল বারান্দা আর বিশাল জানালাওয়ালা এক কটেজ। হোটেলে লাগেজ রেখে মন তো আর চায়না সাগরের হাতছানি উপেক্ষা করে পাল্লাভা রাজবংশের নিদর্শনের অভিযানে যাই। মনটা অবশ্য বেশ বিভক্ত, আরেক অংশ তাড়া দিয়ে বলল, অনেক শখ করে এসেছ তো পূরাকীর্তি দেখতে, এত জলদি সাগরের প্ররোচনায় বিপথগামী হলে!
দেবতার মন্দির ইত্যাদি। কিছু কিছু মন্দিরের কাজ অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। ইতিহাস বলে, এ গুহা মন্দিরের কাজ সাধারণত করত স্থাপত্যকলার ছাত্ররা, তারা কিছু কাজ করে অন্য কাজে হাত দেয়ায় এগুলো অসম্পূর্ণ। স্থানীয় মানুষজন বলেন, কাঞ্চিপুরাম দখলের জন্য যুদ্ধবিগ্রহ লেগেই থাকত, তাই রাজা পরিবর্তনের সঙ্মগেন্দির নির্মানের কাজও অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
কীভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে কোলকাতা বাস, ট্রেন বা বিমানে যাতায়াত করা যায়। কোলকাতা থেকে চেন্নাই যাবার জন্য ট্রেনের ( ভ্রমন সময় ২৬-২৮ ঘন্টা ট্রেন ভেদে) ভাড়া ৬৫০-৪৫০০ রূপি (এসি, নন এসি ইত্যাদি ভেদে) ওয়ান ওয়ে। বিমান(ভ্রমন সময় ২ ঘন্টা কোলকাতা থেকে) ভাড়া ৩০০০ রূপি থেকে শুরু ওয়ান ওয়ে, তবে চাহিদা এবং লভ্যতা অনুসারে যে কোন রূটের বিমান ভাড়া কম বেশি হওয়া অস্বাভাবিক নয়।
মহাবালিপুরামে সব ধরনের হোটেল পাওয়া যাবে, বাজেট থেকে শুরু করে সাত তারা। অনলাইনে ভিসা অথবা মাস্টার কার্ড ব্যবহার করে টাকা পরিশোধ করে সহজেই যে কোন মানের হোটেল রুম বুকিং দেওয়া যায়। হোটেল বুকিং করা না থাকলে, সেখানে গিয়েও পছন্দমত হোটেল পাওয়া যায়।
/এফএএন/