কেবল একটি ক্লিকের দূরত্ব, মুহূর্তেই তারা সেবার সামগ্রী নিয়ে পৌঁছে যান ক্লায়েন্টের দোরগোড়ায়। বেড়েছে উপার্জন, পাচ্ছেন সম্মান- এমনটাই জানালেন বাসায় গিয়ে সৌন্দর্যসেবা দেওয়া নারীরা।
ব্যস্ততার এই যুগে বাসায় বসেই সৌন্দর্যসেবা নেওয়ার গ্রাহক বাড়ছে। এতে বেড়েছে নারীদের কাজের ক্ষেত্র ও উপার্জন। ব্যাংক কর্মকর্তা আনজুম আরা বললেন, ‘সপ্তাহে দুই দিন ছুটি পাই। এর মধ্যে একদিন হয়তো বিভিন্ন কাজে বাইরে যেতেই হচ্ছে। আরেকটি দিন একটু বিশ্রাম নিতে চাই বাসায়। যেহেতু ফেসিয়াল বা মেনিকিওর-পেডিকিওর বেশ খানিকটা সময় সাপেক্ষ, তাই এই দিন একটু আয়েশে থেকে বাসায় বসেই এগুলো করে ফেলি। এতে বাইরে যাওয়ার ঝক্কিও কমে।’ আনজুম আরার মতো এখন অনেকেরই আগ্রহ বাড়ছে ঘরে বসে রূপচর্চায়। এমনকি কোনও পার্টিতে যাওয়ার আগেও ঘরে বসে সেজে নিতেই স্বাচ্ছন্দ্য রোধ করেন অনেকে।
অনলাইনভিত্তিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সেবা এক্সওয়াইজেডের সাথে কাজ করছেন ইসরাত জাহান ও ফাতেমা রিমি। অ্যাপের মাধ্যমেই তারা গ্রাহকদের খুঁজে পান এবং বাসায় গিয়ে সেবা দেন।
বিউটি কিউব বাই ইশরাত এর প্রতিষ্ঠাতা ইসরাত জাহান। তিনি বলেন, আমার পার্লার ছিল যাত্রাবাড়ি এলাকায়। তেমন গ্রাহক পেতাম না। এখন ঢাকা শহরের আনাচেকানাচে ঘুরে সেবা পৌঁছে দিচ্ছি। বেড়েছে উপার্জন ও ব্যস্ততা। আগে পুরো সপ্তাহজুড়ে যে কাজ পেতাম, এখন প্রতিদিনই সেই পরিমাণ কাজ পাচ্ছি।’ ইসরাত মনে করেন, একজন নারী যখন সমাজে কাজ করতে চান তখন অনেক ধরনের বাধার সম্মুখীন হতে হয়। যেমনটা এই পেশায় আসার শুরুতেই পেয়েছিলেন। পরিবারের বাধার মুখে কাজ শুরু করেছিলেন। যখন উপার্জন বেড়েছে, তখন ভেসেছেন প্রশংসায়। এখন সমাজ এবং পরিবার থেকে অনেক বেশি অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন। ‘একবার যদি কাজের মাধ্যমে আপনি প্রতিবাদ করতে শিখে যান, তাহলে আর আপনাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না’- বলেন এই সৌন্দর্যসেবা কর্মী।
একই পেশায় থাকা ফাতেমা রিমির গল্পটাও বেশ চমৎকার। পিংক সেলুনের প্রতিষ্ঠাতা ফাতেমা। তিনি যখন প্রথম পার্লার দিয়েছিলেন, তখন একেবারেই পেতেন না গ্রাহক। আসতেন না গ্রাহকরা। এখন তিনি নিজেই সৌন্দর্যসেবা নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন গ্রাহকদের কাছে। এতো বেশি অনুরোধ পাচ্ছেন সেবা দেওয়ার, যে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। জানালেন, আগে মাসে যা আয় করতেন, তার তিনগুণ বেশি আয় করছেন এখন। ‘বাসায় গিয়ে সেবা দেওয়া অসম্মানজনক’ এই ধারণাতে আমূল পরিবর্তন এসেছে বলেই মনে করেন এই কর্মী।
কথা হলো সেবা এক্সওয়াইজেড এর জনসংযোগ কর্মকর্তা নুসরাত জাহানের সঙ্গে। জানালেন, সেবা এক্সওয়াইজেড নারীদের জন্য নানা ধরনের কাজের সুযোগ তৈরি করে দেয়। এছাড়াও নারীদের দক্ষ কর্মি হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে কাজ করার সুবিধার্থে সাইকেল এবং স্কুটির ব্যবস্থা করে দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।