মাস্টারশেফে তৃতীয় কিশোয়ার, ভাসছেন প্রশংসায়

বিশ্ব আসরে চিনিয়েছেন চটপটি-ফুচকা, লাউ-চিংড়ি, বেগুন ভর্তা, নেহারিসহ দারুণ সব দেশি খাবার। বিচারকরা তার খাসির রেজালার দেখে বলেছিলেন ‘ম্যাজিক ইন আ বোল’। অস্ট্রেলিয়া প্রবাসীদের তো বটেই, গোটা বাংলাদেশকে গর্বে ফুলিয়ে সেরা তিনে উঠেছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কিশোয়ার চৌধুরী। প্রতিযোগিতার ত্রয়োদশ আসরের ফাইনালে হয়েছেন তৃতীয়।  চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলীয় জাস্টিন নারায়ণ। প্রথম রানার আপ হয়েছেন আরেক প্রতিযোগী পিট ক্যাম্পবেল।

চূড়ান্ত পর্বের শুরুটা কিন্তু বেশ চ্যালেঞ্জের ছিল কিশোয়ারের জন্য। হাঁসের একটি পদ রান্না করা শুরু করেছিলেন। বিচারকেরা রান্না দেখে জিজ্ঞেস করেছিলেন ‘এখানে কিশোয়ার কোথায়?’

তারপরেই মেনু বদলে ফাইনাল ডিশ হিসেবে পরিবেশন করেন বাঙালির চির পরিচিত আলু ভর্তা, পান্তা ভাত আর সার্ডিন মাছ।

শেষ দিনের চ্যালেঞ্জে কিশোরারসহ বাকিদের রান্না করতে হয় স্কুইডের বিশেষ একটি রেসিপি ও সিডনির অপেরা হাউসের রেস্টুরেন্টের নিয়মিত ডেজার্ট ‘গোল্ডেন ক্র্যাকার’। 

পুরস্কারের অর্থমূল্য হিসেবে চ্যাম্পিয়ন জাস্টিন নারায়ণ পেয়েছেন প্রায় এক কোটি ৬০ লাখ টাকা। দ্বিতীয় পিট ক্যামবেল পেয়েছেন প্রায় ২০ লাখ ও কিশোয়ার পেয়েছেন প্রায় ১৩ লাখ টাকা। 

ফাইনালের আগের রাউন্ডেও বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে বসেন কিশোয়ার। সেরাও হন ওই পর্বে। সার্ভিস রাউন্ডে মাত্র চার ঘণ্টায় ২৩ গ্রাহক, ২০ অতিথি ও তিন বিচারককে খাওয়াতে হয়েছে তার নিজস্ব খাবার। মাছের পদের সঙ্গে ছিল পানের আইসক্রিম ও নেহারি। ওই পর্বে বাকি দুজনের খাবার বিচারকদের বেশ হতাশ করলেও কিশোয়ারের রান্নার প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন সবাই। 

প্রথম হননি তাতে কী! কিশোয়ারের কারণে আমাদের পান্তা আর আলুভর্তাও এখন ব্র্যান্ড! তার ভাজা মাছ আর খাসির রেজালার স্বাদ সহসা ভুলতে পারবেন না বিচারকরা। অস্ট্রেলিয়া প্রবাসীদের সঙ্গে বাংলাদেশিরাও এখন কিশোয়ারের উপচেপড়া প্রশংসা করছেন। ঘরে ঘরে রান্না হচ্ছে তার রেসিপি।

নওরীন রহমান নামের এক প্রবাসী কিশোয়ারের পেইজের একটি পোস্টের কমেন্টে লিখেছেন, ‘আপনি ইতোমধ্যে আমাদের কাছে বিজয়ী। আমার অস্ট্রেলিয়ায় বড় হওয়া মেয়েটা এখন বাংলাদেশি খাবার বলতে অজ্ঞান।’ মুনিয়া হাসান লিখেছেন, ‘আপনাকে নিয়ে বেশ গর্ব হচ্ছে। অপেক্ষায় আছি রান্নার বইটার জন্য।’

পেশায় ‘বিজনেস ডেভেলপার কিশোয়ার দুই সন্তানের মা। অস্ট্রেলিয়ায় পরিচিত মুখ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী কামরুল হোসাইন চৌধুরী এবং লায়লা চৌধুরীর সন্তান তিনি।