জেমকন সাহিত্য পুরস্কার ২০২০ বিজয়ী লেখকের প্রতিক্রিয়া

‘আমি আপ্লুত’

132044338_766833910906202_979306346937859018_nআমি খুশি। ভালো লাগছে। ‘জেমকন’ এদেশের দু তিনটা ভাল পুরস্কারের একটা, যেটা এদেশের লেখকেরা পেয়ে গর্ব বোধ করেন। আমার ভাল লাগছে ‘আগস্ট আবছায়া‘ বইটার জন্য। আরও কিছু পাঠক এখন এই উপন্যাসটা পড়বেন বলে আমার বিশ্বাস।

মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড নিয়ে রচিত ‘আগস্ট আবছায়া’ বইটি পুরস্কার পাওয়া আমি আপ্লুত। লেখক আমি পুরস্কার পেয়ে যত না বেশি আনন্দিত তার চেয়েও বেশি আনন্দিত এই বইটি পুরস্কার পাওয়ার জন্য।

আমাদের দেশের লেখকদের না আছে ঠিক মূল্যায়ন, না কোনো রয়ালটির অর্থযোগ। সে হিসাবে ভাল পুরস্কারগুলোর একটা পাওয়া কিছু মোটিভেশন জোগায়। এই সময়ে লেখালেখি করা কঠিন কাজ। মনই তো মরা থাকে সবার নানাভাবে। পুরস্কার সাময়িকভাবে মন ভাল করার একটা দাওয়াই।

এই মুহূর্তে আমার খুব মিস করছি বইটির রক্ত-হিম-করা প্রচ্ছদের স্রষ্টা প্রিয় শিল্পী সেলিম আহমেদকে। মাত্র দু‘ দিন আগে আমি তার আকস্মিক মৃত্যু নিয়ে লিখেছি এই ফেসবুকে। ‘আগস্ট আবছায়া‘র ভালো এক পাঠকগোষ্ঠি গড়ে উঠেছে গত দু‘ বছরে। তারা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন, আর তাদের অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেন উপন্যাসের পুরোটা জুড়ে মৃত্যু নিয়ে এত কাজ, এত গবেষণা দেখে।

প্রচ্ছদে আঁকা সেলিম আহমেদের দুই নির্বিকার মহিষ উপন্যাসের অন্যতম সেই মূল থিমকে—জীবনের মৃত্যুময়তাকে—আবছায়া মতো লেপটে-ধেবড়ে-জেবড়ে যাওয়া সেন্টার পয়েন্টটার নিচে বাঁয়ে এমনভাবে মূর্ত করেছিল যে প্রচ্ছদটা দেখলেই আজও আমার মৃত্যু ভয় হয়। 

পুরস্কার পাওয়ার এই দিনে আমি দুঃখিত যে আমার শুধু সেলিম ভাইকেই মনে পড়ছে। মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের কোন্ এক ছোট নিঃসঙ্গ জায়গায় কেমন এক মর্মঘাতী ঘোর অন্ধকারে এ-মুহূর্তে শুয়ে আছেন তিনি, আর বাইরে পৃথিবীতে তার প্রিয় মাসরুর আরেফিন কিনা উচ্ছ্বাস করছে পুরস্কারের আলোয়। নাহ!

বিচারকদেরকে ধন্যবাদ।