এবারের বইমেলা হবে ঝলমলে

[আসাদ চৌধুরী ষাটের দশকের অন্যতম প্রধান কবি ও লেখক। তিনি ১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি, বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। বাংলা ভাষায় স্বতন্ত্র কাব্যিক ভাষা সৃষ্টি করে নিজস্বতা অর্জন করেছেন। `তবক দেওয়া পান’, `জলের মধ্যে লেখাজোখা’, `যে পারে পারুক’, `বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’, `রাজার নতুন জামা’ ইত্যাদি তার উল্লেখ্যযোগ্য কীর্তি। তিনি অর্জন করেছেন, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-১৯৮৭,  জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার-২০০৬, একুশে পদক-২০১৩ সহ অসংখ্য সম্মাননা। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২২ প্রসঙ্গে কথা বলেন কবি আসাদ চৌধুরী।]

প্রশ্ন : অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২২ কেমন দেখতে চান?
উত্তর : অমর একুশে বইমেলা আমাদের গভীর আবেগ, ভালোবাসা থেকে উৎসারিত যা আমাদের চেতনার সাথে মিশে গেছে। ফলে এটি পুরো বাঙালি জাতির জন্য একটি উৎসবরূপে পরিণত হয়েছে। যেহেতু আমরা একটি কঠিন পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে যাচ্ছি, সেহেতু কর্তৃপক্ষ খুবই সতর্কতার সহিত সবকিছু ব্যবস্থা করছে।আমি মনে-প্রাণে প্রবলভাবে কামনা করছি, এবারের বইমেলা হবে ঝলমলে, প্রাণবন্ত এবং চমৎকার।

প্রশ্ন : এ বছর আপনার কী কী বই আসবে? কোন প্রকাশনা থেকে?
উত্তর : আগামী প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’। বাউণ্ডুলে থেকে আসবে জীবনীমূলক গ্রন্থ ‘আবুল হাশিম’। এছাড়াও আমার প্রায় ৫টি গল্পের বইয়ের পুনর্মুদ্রণ প্রকাশ হচ্ছে।

প্রশ্ন : প্রকাশিতব্য বই সম্পর্কে জানতে চাই।
উত্তর : ‘আবুল হাশিম’ যিনি তৎকালীন মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বাঙালি মুসলিম সমাজের স্বরূপগঠনে তাঁর অবদান সম্পর্কে লেখা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা আমার কয়েকটি বই রয়েছে, তবে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ বইয়ে বাংলাদেশ সৃষ্টিতে বঙ্গবন্ধুর অসামান্য ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেছি।

প্রশ্ন : আপনার লেখা প্রথম বই প্রকাশের অনুভূতি কেমন ছিল? এ সম্পর্কে যদি কিছু বলেন…
উত্তর :  আমার লেখা প্রথম বই শিশু-কিশোরবিষয়ক গ্রন্থ ‘সংগ্রামী নায়ক বঙ্গবন্ধু’ যা বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত হয়েছিল। বইটি প্রকাশের অনুভূতি বেশ অন্যরকম ছিল। কারণ এটি লিখতে খুব সংগ্রাম করতে হয়েছে। ১০ জানুয়ারি, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সময় লেখাটি শেষ করেছিলাম।

প্রশ্ন : অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২১-এর অভিজ্ঞতা কেমন?
উত্তর : দেশের বাইরে অবস্থান করায় মেলায় যেতে পারিনি। এজন্য খুব আক্ষেপ হয়েছিল। বন্ধু-বান্ধব, পরিচিতদের মুখে শুনেছি এবং সংবাদে দেখেছি, মেলা ছিল প্রাণহীন।

প্রশ্ন : বইমলোর পর আমাদের বই খুঁজে পাওয়া যায় না, দোকানও স্বল্প। এ পরিস্থিতিতে পাঠকের কাছে বই পৌঁছাতে আপনার ভাবনা কী?
উত্তর : শুরুর দিকে সৃজনশীল প্রকাশকরা একান্তই নিজেদের প্রচেষ্টায় উদ্যোগ নিয়ে বিভিন্ন স্থানে মেলার আয়োজন করত। তারা এখন সেই অর্জিত অভিজ্ঞতা নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে। তবে বই পাঠকের কাছে পৌঁছাতে, পাঠকের চাহিদা পূরণে সক্ষম হতে হবে।পাঠক কেমন বই পছন্দ করে তা নিয়ে যদি জাতীয় গ্রন্থাগার এবং বাংলা একাডেমি যৌথভাবে একটি জরিপ করতে পারে, তাহলে আমরা পাঠকের খুব নিকটে পৌঁছে যাব। এছাড়াও সরকারি বিভিন্ন খাতে বা জাতীয় গ্রন্থাগার সৃজনশীল প্রকাশনা থেকে বই ক্রয় করতে পারে।