আব্বাস কিয়ারোস্তামির কবিতা

আব্বাস কিয়ারোস্তামি তার সময়ের অন্যতম প্রভাবশালী চলচ্চিত্রকার। তিনি প্রায় চল্লিশটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন; এসবের মধ্যে ‘ককার ট্রিলজি’, ‘ক্লোজ-আপ’, ‘টেইস্ট অব চেরি’ উল্লেখযোগ্য। চলচ্চিত্র নির্মাণ ছাড়াও প্রকাশ করেছেন নিজের লেখা কবিতার বই। অনূদিত কবিতাগুলো কিয়ারোস্তামির ‘আ উলফ লায়িং ইন ওয়েট’ বই থেকে নেওয়া।



একটা পাখি 
মাঝরাতে গান গায়
অচেনা
এমনকি অন্য পাখিদের কাছেও।

৯ 
হিমকরা শীতের এক রাতে
একটা কাকতাড়ুয়া 
জামা আর টুপিহীন।

২২
ক্বাফ পাহাড়ের চূড়া থেকে
আমি চড়ুইয়ের তিনটা ডিম পেলাম।
কী দুঃসাহ
নিচে নেমে আসা।

২৬
আজকের সুযোগটা হারিয়ে গেল
গতকালেরটার মতোই;
রয়ে যায়
দিনগুলোর একটা রেকর্ড।

২৮
আমার জিহ্বায় 
ধৈর্যের তেতো স্বাদ 
আছে এমন মধুর কেউ যে এ-স্বাদ মুছে দিতে পারবে?

২৯
তোমার অনুপস্থিতিতে
আমি নিজের সাথে তর্ক করি।
মতৈক্যে চলে আসি আমরা
সব কিছুতেই
কত সহজে।

৩২
আমার একাকিত্বের 
একটা বড় অংশ আমি চাই
তোমার থেকে।

৩৫
এক্সপ্রেস মেইলে
একটা চিঠি আসলো
ঘৃণায় পরিপূর্ণ।

৪৫
ধানক্ষেতে কাজ করা মহিলারা
গুনগুন করে বিলাপ করে
প্রেমিকের বিশ্বাসঘাতকতার
অথবা পিঠব্যথায়। 

৪৬
আমি অনুমান করি
বেহেশতের ফলসমূহের স্বাদ 
প্রতিবেশীর ক্ষেতে হওয়া
নীরস শসায়।

১০৯
কীভাবে 
আমি শান্তিতে ঘুমাতে পারি
যখন সময় এক সেকেন্ডের জন্যও থামে না
এমনকি ঘুমের ভেতরেও না।

১১৪
আকাশ ভেঙে পড়ে
ভাঙা একটা আয়নায়।

১৪৩
আমার জন্মস্থানটা দেখতে গিয়ে
খুঁজে পেলাম না
আমার আবার বাড়ি 
এমনকি আমার মায়ের কণ্ঠস্বরটাও।

১৭৫
মাতাল একজন
নীরবতায়,
ধর্মতত্ত্ববিদ একজন
অস্থিরতায়।

১৭৬
আমি স্বাধীন 
আমার যন্ত্রণা 
নির্বাচনে।

১৮০
আমার অর্ধেকটা 
তোমার,
বাকি অর্ধেকটা 
আমার।

১৮৬
আমি লিখি
আমার ভাগ্য
একটা ডায়েরিতে 
এক অন্ধকার রুমে।