ভূমিকার বদলে
পথে পথে এইসব খড়কুটো কুড়োতে কুড়োতে
কিছু ধুলো, কিছু ছাই
গায়ে মাখি। কোথাও কর্পূর নাচে
সুগন্ধি চন্দন ফোটে ঘামে।
বিশুদ্ধ গদ্যের খাদে
পড়ে আছি,
পড়ে থাকি,
কবিতার নামে।
নিঃসঙ্গতা
আমাকে জিজ্ঞেস করো না
নিঃসঙ্গতা কী—
যে শূন্যতায় ঝুলছি
মহাকর্ষ,
অভিকর্ষ
কিছুই এখানে কাজ করে না
গোল্ডফিশ
উজান স্রোতের পুঁটি
একটু বাঁধা পেলে
লাফ দেয়
অভ্যস্ত গোল্ডফিশ
কাঁচের পাত্রকে পৃথিবী ভেবে
সুখে থাকে
সে জানে না
কোথাও সমুদ্র রয়েছে
যুদ্ধ-বয়ান
এই শীতে
উদোম গায়ে
গাছতলায়
উবু হয়ে থাকাটা কী কষ্টের!
ভাগ্যিস বোমা পড়ে
বাড়িটা
জ্বলছিল
তাতেই যা একটু আলো
তাতেই যা তাপ
হয়ত এভাবে তুমি
হয়ত এভাবে তুমি দ্যাখোনি কো দৃশ্যগুলি
নিজস্ব ফুলের মত সাজাতে চেয়েছো
বোঝোনি কো দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তরে
ভুল থাকে পরতে পরতে
এবং কী আশ্চর্য দ্যাখো
মানুষের ভুলগুলো সাঁওতালি খোঁপায়
পরম গোলাপ হয়ে ফোটে
জ্ঞান
কবিরা জানে
মানুষের মহত্ত্বগুলো
দুঃখ থেকে আসে
সুফিরা জানে
প্রকৃত বীরত্ব হলো
অনাকাঙ্ক্ষার শিশু
সমুদ্র জানে
উপরে প্রবল ঢেউ
নিচেই স্থিরতা
সাধক জানে
স্বর্ণের কেন এত
অগ্নি-প্রিয়তা
এগোনোর গল্পগুলো
ইতিহাসে দেখি
প্রগতির অশ্বের খুরে অতীতের ধুলোবালি ওড়ে
সেটা মিথ্যে নয়
স্মৃতির খোলস ছিঁড়ে মানুষ এগিয়ে যায়
তাকে এগোতেই নয়
কারও দুরন্ত দুপুর
কারও পায়ের নূপুর
এই সব ফেলে দিয়ে নতুন দিনের বরাভয়
এগোনোর গল্পগুলো এরকমই হয়
নিমন্ত্রণ
ধীরে ধীরে
নিজেকে
খুলছি
যারা
আমাকে
রাস্তায়
উলঙ্গ
দেখতে চান,
চলে আসুন
ফুটপাতে
কিছু স্থান
অবশিষ্ট আছে
জীবনের ডালপালা
কত কী
বলার
থাকে
মানুষের!
আঙিনায়
শালিক পাখির
নাচ দেখতে দেখতে
জীবন
কেটে যায়
বলা হয় না
কিছুই
শুধু
চিরকালীন মেঘের নীচে
সূর্যের প্রতিশ্রুতির মত
আকাঙ্ক্ষারা
দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর ছায়া ফেলে
আর ফাঁক-ফোকর
সামান্য আলোর আভাসে
জীবনের ডালপালা
পল্লবিত হতে থাকে
দেখা হয় না
এই সময়ে
সবার সঙ্গে দেখা হয়
তোমার ও তার সঙ্গে
সে ও তাদের সঙ্গে
নিকট ও দূরের সঙ্গে
একটি ধানের শিসের ওপর
একটি শিশির বিন্দুর সঙ্গে
কেবল নিজের সঙ্গে দেখা হয় না
কেবল নিজেকেই খুঁজে ফিরতে হয়...