আন্দোলনের মুখে বাসভবন থেকে বের হননি শাবি ভিসি

ছাত্রী হলের আবাসিক সমস্যা নিরসনের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ও পুলিশি হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ভিসি ফরিদ উদ্দিনসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিভিন্ন দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের পদত্যাগ দাবি এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে আন্দোলনের মুখে সারাদিন নিজ বাসভবনেই অনেকটা অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন ভিসি প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন।  

শাবির বিভিন্ন ভবনে ঝুলছে তালা, উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

এ দাবিতে সোমবার (১৭ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ভিসির বাসভবনের প্রধান ফটক আটকে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন তারা প্রতিবাদী কনসার্ট আয়োজন করে রাতে ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন। 

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে তেমন কোনও ব্যবস্থা করেননি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। 

এদিকেআন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলেও তারা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি।  

শিক্ষার্থীরা জানান, দিনভর বিক্ষোভ মিছিল ও নানা কর্মসূচি পালন শেষে বিকাল সাড়ে ৫টায় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা।  

শাবিপ্রবির ঘটনায় তদন্ত কমিটি

এ সময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে 'যে ভিসি বোমা মারে সেই ভিসি চাই না, যে ভিসি গুলি ছোড়ে সেই ভিসি চাই না’, ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বাসভবনের পুরো এলাকা পুলিশ ঘিরে রেখেছে। 

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায় ভিসি ফরিদ উদ্দিন আজ দিনভর নিজ বাসভবনে অবস্থান করেছেন। আন্দোলনের কারণে তিনি বাসভবন থেকে বের হননি। 

হল না ছেড়ে ক্যাম্পাসে শাবি শিক্ষার্থীরা, ভিসির পদত্যাগ দাবি

আবাসিক হলের সমস্যা নিরসনের দাবিতে ছাত্রীদের আন্দোলনে ছাত্রলীগ ও পুলিশি হামলার ঘটনার পর শিক্ষা কার্যক্রম ও আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা হল না ছেড়ে ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন। 

রবিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। ভবনের তিন তলার ৩৩৩ নম্বর কক্ষে কিছু কর্মকর্তা ও শিক্ষকসহ তিনি অবস্থান করেন। বিকাল ৪টায় আইআইসিটি ভবনের সামনে উপাচার্যকে মুক্ত করতে পুলিশ উপস্থিত হয়। এ সময় ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন? প্রশাসন জবাব চাই’ স্লোগানে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা।

সন্ধ্যায় লাঠিপেটার পাশাপাশি, রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুড়ে পুলিশ ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করে ভিসিকে উদ্ধার করে বাংলোতে পৌঁছে দেন। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদ অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে সোমবার (১৭ জানুয়ারি) ১২টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেন। তবে শিক্ষার্থীরা হল না ছেড়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

আরও পড়ুন:

অনির্দিষ্টকালের জন্য শাবিপ্রবি বন্ধ ঘোষণা, ছাড়তে হবে হল

শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ওপর টিয়ারশেল ও লাঠিচার্জ, আহত শতাধিক 

শাবিপ্রবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মশাল মিছিল

শাবিপ্রবিতে ছাত্রীদের ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি প্রগতিশীল ছাত্র জোটের