চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত কমিটি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকদের সার্বক্ষণিক হলে অবস্থানের ব্যাপারে নির্দেশনার কথাও ভাবছে প্রশাসন। এ ছাড়া অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) রাত ১২টার দিকে সংঘর্ষে জড়ায় শাখা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক দুই গ্রুপ সিএফসি ও বিজয়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত দুই জন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। সংঘর্ষের পর বুধবারও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে ক্যাম্পাসে। বিবাদমান পক্ষ দুটি দুই হলে অবস্থান করছে।

এ ঘটনায় সহকারী প্রক্টর রামেন্দু পারিয়ালকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—সহকারী প্রক্টর এসএএম জিয়াউল ইসলাম, সোহরাওয়ার্দী হলের আবাসিক শিক্ষক মোরশেদুল আলম ও শাহ আমানত হলের আবাসিক শিক্ষক হাসান মুহাম্মদ রোমান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. শহিদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, উপাচার্য ও প্রক্টরিয়াল বডির জরুরি সভায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি দ্রুততম সময়ে ঘটনার কারণ উদঘাটন করে প্রতিবেদন জমা দেবে। আজ থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে অতিরিক্ত লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, হাউজ টিউটর ও প্রাধ্যক্ষরা যেন সার্বক্ষণিক হলে অবস্থান করেন, সে ব্যাপারে একটি নোটিশ তৈরি করা হয়েছে। অবিলম্বে তাদের কাছে পাঠানো হবে। আর সভা-সমাবেশের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি বাস্তবায়নে অধিকতর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, বিবাদমান দুই গ্রুপই শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তবে সিএফসি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল ও বিজয় সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াসের অনুসারী।

সংঘর্ষের বিষয়ে বিজয় গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি না দিতেই রুবেল আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করেছে। ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত আমরা আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। সে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে এটাকে পিছিয়ে দিতে চাচ্ছে।

তিনি বলেন, তারা অতর্কিতে আমাদের ওপর ঢিল মারা শুরু করে। সঙ্গে সঙ্গে দা-ছুরি নিয়ে দুই দিক থেকে হামলা করেছে। আমাদের এক কর্মীর মাথা ফেটেছে। আরেকজনকে হাতে দায়ের কোপ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে রেজাউল হক রুবেল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বগিভিত্তিক সংগঠন নিষিদ্ধ করেছে ছাত্রলীগ। আমরা বিষয়টা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবো।

২০১৯ সালের ১৫ জুলাই সিএফসির নেতা রেজাউল হককে সভাপতি ও সিক্সটি নাইনের নেতা ইকবাল হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেই সঙ্গে দ্রুত কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার নির্দেশনা দেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতারা। তবে আড়াই বছরেও সেই কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়নি। এসব নিয়ে পদপ্রত্যাশীরা ক্ষুব্ধ বলে জানা গেছে।