শিক্ষামন্ত্রীর কাছে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের যত প্রস্তাব

চলমান আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ১১ সদস্যের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দল শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসতে শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকাল তিনটায় সিলেটের সার্কিট হাউজে যান।

জানা যায়, আলোচনায় শিক্ষার্থীরা তাদের বিভিন্ন দাবি ও বেশ কিছু প্রস্তাবনা রাখেন। আলোচনা হয় প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে।

প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে—অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে উপাচার্য পদ থেকে অপসারণ করে একজন গবেষণামনষ্ক, শিক্ষাবিদ ও অবিতর্কিত ব্যক্তিকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রশাসনিক পদে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ ও অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের ওপর দায়েরকৃত হয়রানিমূলক মামলাগুলো তুলে নেওয়া হোক।

এছাড়া শিক্ষার্থীদের সকল ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা, পুলিশি হামলার শিকার শিক্ষার্থী সজল কুন্ডুকে ক্ষতিপূরণ ও তার সরকারি চাকরি নিশ্চিত করার দাবিও জানান শিক্ষার্থীরা।

এছাড়া প্রস্তাবনায় আছে—বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অভ্যন্তরীণ বার্ষিক রাজস্ব বাজেটের কমপক্ষে ৩০ শতাংশ গবেষণা খাতে বরাদ্দ দেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতা পিএইচডিতে উন্নীত করা, শিক্ষক নিয়োগের আগে ডেমো ক্লাস নেওয়া, নিয়োগকৃত শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে গোপন কোড চালু, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পুলিশের স্থাপনা অপসারণ করা ও আবাসিক হলগুলোকে বছরের সব দিন খোলা রাখা।

শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ভিসি অপসারণ পুরোপুরি মাননীয় রাষ্ট্রপতির এখতিয়ারে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো যৌক্তিক উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের বক্তব্য আমরা শুনেছি। তাদের কথা বুঝতে চেষ্টা করেছি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান, শিক্ষকতার মান, শিক্ষার সার্বিক পরিবেশ কীভাবে উন্নত করা যায় সেসব চিন্তা করে বেশ কিছু প্রস্তাব দাঁড় করিয়েছে তারা। তাদের অনেক দাবিই পূরণ হয়েছে। বাকিগুলো নিয়েও দ্রুত উদ্যোগ নেবো। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিক পরিস্থিতি দ্রুত ফিরিয়ে আনতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।

আলোচনা চলাকালে শিক্ষামন্ত্রী ছাড়াও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আফসার উদ্দিন কামালী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ফেরদৌস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী মুহাইমিনুল বাশার রাজ, ইয়াসির সরকার, নাফিসা আনজুম, সাব্বির আহমেদ, আশিক হোসাইন মারুফ, সাবরিনা শাহরিন রশীদ, সুদীপ্ত ভাস্কর, শাহরিয়ার আবেদিন, আমেনা বেগম, মীর রানা, জাহিদুল ইসলাম অপূর্ব আলোচনায় অংশ নেন।