চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যালে ছাত্রলীগের অবরোধ

ভুল চিকিৎসার অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) মেডিক্যাল অবরোধ করেছে ছাত্রলীগের একাংশ। চিকিৎসক ও কর্মচারীদের বের করে মেডিক্যালের মূল ফটকে অবস্থান নেন তারা। এ সময় ভেতরে এক রোগী ও তার দুই আত্মীয় অবস্থান করছিলেন।

শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর প্রায় আড়াইটা থেকে মেডিক্যাল অবরোধ করে রাখা হয়। বিকাল ৪টার দিকে প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশের উপস্থিতিতে অবরোধ সরিয়ে নিলে খুলে দেওয়া হয় মেডিক্যাল। পরে উপাচার্য বরাবর একটি লিখিত অভিযোগও দেন তারা। অবরোধকারী সবাই শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও চবি ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াসের অনুসারী বলে জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা. কামরুন্নেছা বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কিছু শিক্ষার্থী এসে আমাদেরকে বললো, বের হয়ে যেতে হবে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা মেডিক্যাল বন্ধ রাখবেন। আমরা তাৎক্ষণিক প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং নিরাপত্তার বিষয় চিন্তা করে বের হয়ে যাই। এ সময় আরেকজন চিকিৎসক ও বেশ কিছু স্টাফও ছিলেন সেখানে।’

তিনি বলেন, ‘ওই সময় এক রোগী ও তার স্বামী মেডিক্যালে অবস্থান করছিলেন। তবে শিক্ষার্থীরা কোন ধরনের ভাঙচুর কিংবা কারও সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেননি।’

লিখিত অভিযোগপত্রে শিক্ষার্থীরা জানান, শনিবার ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মামুনকে ভুল ওষুধ প্রয়োগ করায় সে মুমূর্ষু অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হতে বাধ্য হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা মেডিক্যাল নিয়ে ৯টি অভিযোগ করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো- চিকিৎসার মান খারাপ, চিকিৎসকরা সময়মতো উপস্থিত থাকেন না, সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব নেই, চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই, থাকলেও সেগুলো নষ্ট ও ছয়টি অ্যাম্বুলেন্স থাকার পরও মাত্র দুইটি সচল রয়েছে।

শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, ‘এর আগে আমরা মেডিক্যাল নিয়ে ১৮ বার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। আজকে জুনিয়ররা দাবি-দাওয়া নিয়ে এখানে এসেছে। আমরা প্রক্টরিয়াল বডির আশ্বাসে আবারও লিখিত দাবি জানালাম।’

বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কবির হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এসে দেখি শিক্ষার্থীরা মেডিক্যাল বন্ধ করে রেখেছেন। তখন এখানে চিকিৎসক ও স্টাফ কেউ ছিলেন না। তবে শিক্ষার্থীদের কোনও ভাঙচুর বা এ ধরনের কর্মকাণ্ড করতে দেখিনি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. শহীদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা একটি অভিযোগপত্র দিয়েছে। আমরা বিষয়গুলো বিবেচনা করবো। আর কেউ যদি চিকিৎসক বা স্টাফদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে থাকে, মেডিক্যালের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আমরা ব্যবস্থা নেবো।’