ধর্ষণের বিচার দাবিতে চোখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের বিচার দাবিতে চোখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।

শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

এ সময় চোখে কালো কাপড় বেঁধে ধর্ষণের প্রতিবাদ জানিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানান। সেই সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সভাপতি জাকিয়া সুলতানা মুক্তা বলেন, ‘ধর্ষণের বিচার দ্রুত করতে হবে। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’

এর আগে সকাল ১০টায় সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা জানান, শুধুমাত্র ধর্ষণের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারই নয়, অন্যান্য দাবিগুলোও বাস্তবায়ন করতে হবে। আন্দোলনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বাস দিতে হবে।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো—ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করে জনসমক্ষে তাদের নাম–পরিচয় প্রকাশ করা ও সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শিক্ষকদের ওপর হামলাকারী স্থানীয় লোকজনকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা, ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত ও ক্যাম্পাসে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত বহিরাগতদের প্রবেশাধিকার বন্ধ করা এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রশাসন, পুলিশ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ভূমিকা সম্পর্কে অবহিত করা এবং সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাওয়া।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টা ২৫ মিনিটে গোপালগঞ্জ জেলা স্কুলের নির্মাণাধীন ভবনে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তার বন্ধুর সঙ্গে গোপালগঞ্জ সদরের নবীনবাগ হেলিপ্যাডের সামনে থেকে হেঁটে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে তাদের অটোতে তুলে নেওয়া হয়। পরে ৭-৮ জন মিলে তাদের গোপালগঞ্জ জেলা স্কুলের নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে যায়। সেখানে বন্ধুকে মারধর করে ওই শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে।

এ ঘটনার বিচার চেয়ে শিক্ষার্থীরা প্রথমে সদর থানা এবং পরে মহাসড়ক অবরোধ করে। বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৫টায় প্রথম দফায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ঘোনাপাড়া মোড়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় কয়েকজন আহত হন। এরপর দ্বিতীয় দফায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ৩০ জন আহত হন।