বিভাগীয় প্রধানকে অবরুদ্ধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রধানের বিরুদ্ধে স্নাতকোত্তর পরীক্ষার প্রকাশিত ফলে অসঙ্গতির অভিযোগ এনে তার কক্ষে তালা দিয়ে প্রতিবাদ করেছেন শিক্ষার্থীরা। দেড় ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের আশ্বাসে বুধবার (৩০ মার্চ) দুপুরে আন্দোলন স্থগিত করা হয়।

এর আগে মঙ্গলবার সকাল ১১টায় বিভাগের সামনে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের মাস্টার্স শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে অভিযোগের বিষয়টি তুলে ধরেন। এ সময় বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলামকে তার কক্ষে অবরুদ্ধ করা হয়। খাতা পুনর্মূল্যায়ন করা হলে কমপক্ষে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর পয়েন্ট বাড়বে বলে দাবি করেন তারা।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে স্নাতোকোত্তর পরীক্ষার ফল না পাওয়ায় ২৮ ফেব্রুয়ারি আমরা স্যারদের অনুরোধ করেছি দ্রুত ফল দিতে। অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম স্যার বলেছিলেন, এপ্রিল মাসে দেওয়া হবে। আমরা আরেকটু দ্রুত দাবি করলে মঙ্গলবার ফল দেওয়া হয়। কিন্তু আমাদের মনে হয় শিক্ষকরা উত্তরপত্র যাচাই না করেই ফল প্রস্তুত করেছেন। তিনি (অধ্যাপক নজরুল) পরীক্ষার খাতা হারিয়ে ফেলায় তিনবার একটি ইনকোর্স পরীক্ষায় বসতে হয়েছিল আমাদের। এমনকি বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করা কোনও শিক্ষার্থীকে শিক্ষক হতে দেবেন না বলে হুমকি দেন তিনি।’

তারা আরও বলেন, ‘আমাদের অনার্সের ফলে ত্রিশ জনেরও বেশি শিক্ষার্থীর সিজিপিএ গড় ৩.৫০ আছে। সেখানে মাস্টার্সের ফল সর্বোচ্চ ৩.৪৫ সিজিপিএ এসেছে। অথচ আমাদের সবার পরীক্ষা এর চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে। আমরা মনে করি, আমাদের খাতা মূল্যায়ন না করেই ফল ঘোষণা করা হয়েছে।’

শিক্ষার্থী জারমিনা রহমান বলেন, ‘স্যারদের কোথাও ভুল হতে পারে। আমি পুনরায় মূল্যায়ন করার অনুরোধ জানাই। আমি ভালো পরীক্ষা দিয়েছি। আমার যে ফল এসেছে তা প্রত্যাশিত নয়।’

এ বিষয়ে জানতে বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলামের দফতরে গেলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান বলেন, ‘আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি। আজ উপাচার্য স্যারের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধান করা যায় কিনা দেখা হবে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, ‘অনুষদে সিনিয়র শিক্ষক হওয়ায় তার (নজরুল ইসলাম) বিরুদ্ধে যায় এমন কোনও কথা বলা যায় না। তিনি ক্লাসের চেয়ে শিক্ষক-রাজনীতিতে বেশি ব্যস্ত থাকেন। ছয় মাসের কোর্সে চার-পাঁচটি ক্লাস করিয়ে পরীক্ষায় বসান শিক্ষার্থীদের। যে কারণে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’