ছাত্রীকে মদ পানের প্রস্তাব, ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির দুই পক্ষের হাতাহাতি 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির এক কর্মীর বিরুদ্ধে ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত ও মদপানের প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শাখা ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির দুই গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (৩ আগস্ট) সকালে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের কর্মী মেহেদী হাসান মুনের বিরুদ্ধে প্রক্টর বরাবর অভিযোগপত্র দেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। এ সময় ছাত্রীর দুই সহপাঠী নিরাপত্তা চেয়ে প্রক্টর বরাবর আবেদন করেন। এর কিছুক্ষণ পর মুনও প্রক্টর অফিসে উপস্থিত হয়ে ওই ছাত্রীদের বিরুদ্ধে উত্ত্যক্তের অভিযোগ তুলে লিখিত অভিযোগ দেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ফটকে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী ছাত্রী অভিযোগে উল্লেখ করেন, মেহেদী হাসান মুন তাকে বিভিন্ন সময় উত্ত্যক্ত করে আসছিল। একপর্যায়ে মুন তাকে মদপানের প্রস্তাব দেয়।

তবে মুন তার অভিযোগপত্রে জানান, তিন ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের অভিযোগ তুলে তাকে মারধর করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নওশের বিন আলম ডেভিড, গণিত বিভাগের জাহিদুল ইসলাম হাসান ও মাহথির আনান আলিফ। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের দাবি জানান। 

তবে নিজের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন মুন। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমাকে ওই তিন ছাত্রী মেসেঞ্জারে নক দিতো। আমি ক্যাম্পাসে গেলে তারা আমাকে উত্ত্যক্ত করতো। কিন্তু আমি আজ মারধরের শিকার হয়ে যখন প্রক্টর অফিসে অভিযোগ দিতে যাই, তখন দেখি ওই ছাত্রীরা উল্টো আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে।’

এদিকে মুন অভিযোগ দেওয়ার পর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ফটকে শাখা ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক দুই পক্ষের কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুই গ্রুপের সিনিয়র নেতাকর্মীরা পরিস্থিতি সামাল দেন।

এর আগে ২০২১ সালে মুনের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমকর্মীকে হেনস্তার অভিযোগ ওঠে। এছাড়া ২০১৯ সালে এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের জেরে সংঘর্ষে জড়ান তৎকালীন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন রাসেলের অনুসারীরা। এ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত হয়। 

এদিকে বর্তমানে স্থগিত কমিটির সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি বলেন, ‘জুনিয়র কর্মীদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে শুনেছি। তাদের ডেকে কথা বলবো, কি হয়েছে দেখবো।’

এ বিষয়ে কথা বলতে কমিটির সাধারণ সম্পাদক আখতার হোসেনের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ পাওয়া যায়নি। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘অভিযোগপত্র এসেছে দুটি। তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।’