ফেল করেও রাবিতে ভর্তির সুযোগ পেলেন ৭১ শিক্ষার্থী

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করেও ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন ৭১ শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংরক্ষিত পোষ্য (ওয়ার্ড) কোটা, খেলোয়াড় কোটা এবং বিশেষ বিবেচনায় তাদের ভর্তির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। রবিবার বিকালে ভর্তি উপ-কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া সভায় বিশেষ বিবেচনায় চার জনকে ভর্তি এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড কোটা ১% শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পরীক্ষা উপ-কমিটি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর রাবির প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার পাস মার্ক নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪০ নম্বর। এ ছাড়া মোট আসনের বিপরীতে ৫% আসন (ওয়ার্ড কোটা) বরাদ্দ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য। কিন্তু নির্ধারিত পাস মার্ক না পাওয়ায় পোষ্য কোটার আসনগুলো খালি ছিল। পরে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের সন্তানদের ভর্তি আবেদন করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে পাস নম্বর ৩০ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর ফলে ৭১ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে।

ভর্তি পরীক্ষা কমিটির একাধিক সদস্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। উপ-কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘কোটা নিয়ে আমরা বেশ বিব্রত। প্রথম দফা আবেদন আসার পর আমরা সভা ডেকেছিলাম। সেখানে আমরা অকৃতকার্যদের নেওয়ার বিপক্ষে মত দিয়েছিলাম। কিন্তু শিক্ষার্থীদের অভিভাবক এখানকার শিক্ষক-কর্মকর্তা, কর্মচারীরা পুনরায় আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ফের বৈঠকে বসতে বাধ্য হই। সেখানে অকৃতকার্যদের ভর্তির সিদ্ধান্ত হয়। তবে এ ক্ষেত্রে অকৃতকার্যরা মোস্ট ডিমান্ডেবল সাবজেক্টগুলোতে ভর্তি হতে পারবে না। এ ছাড়া ওয়ার্ড কোটা ১% কমিয়ে ৪ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ কর্তা-ব্যক্তিরা অকৃতকার্যদের ভর্তির পক্ষে ছিলেন না। কিন্তু বিভিন্ন জায়গার চাপে তারা বাধ্য হয়েছেন।’

ভর্তি সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীদের ফল

ভর্তি সুযোগ পাওয়া ৭৫ শিক্ষার্থীর মধ্যে বিভিন্ন ইউনিটের ৭১ জন রয়েছেন যারা নির্ধারিত পাস নম্বর পাননি। তাদের মধ্যে  ৩০ থেকে ৩৪ নম্বর পেয়েছেন ৩০ জন, ৩৫ থেকে ৩৭ পেয়েছেন ১৬ জন এবং ৩৮ থেকে ৩৯ পেয়েছেন ১৪ জন। এ ছাড়া ৭ জন শিক্ষার্থী ৪০ নম্বর পেলেও সি ইউনিটের শর্ত অনুযায়ী আবশ্যিক অংশে ২৫ এবং ঐচ্ছিকে ১০ না পাওয়ায় তারা অকৃতকার্য ছিল।

এ ছাড়া শরীর চর্চা শিক্ষা বিভাগের পরিচালকের সুপারিশে খেলোয়াড় কোটায় চার জনকে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তারা কেউ পরীক্ষায় কৃতকার্য হননি।

অন্যদিকে, কোটা না থাকার পরেও বিশেষ বিবেচনায় ডাইনিং কর্মচারীর দুই সন্তানকে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। পরীক্ষায় কৃতকার্য হলেও তাদের সিরিয়াল দূরে ছিল। এ ছাড়া বিভাগে পোষ্য কোটার ৫% আসন পূরণ হওয়ার পরও বিশেষ বিবেচনায় দুজনকে ভর্তির সুপারিশ করা হয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে ভর্তি উপ-কমিটির সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য সুলতান উল ইসলাম বলেন, ‘আসন ফাঁকা থাকায় অকৃতকার্য কয়েকজনকে ভর্তির সুপারিশ করা হয়েছে। তবে আগামীতে যাতে এমনটা না হয় সেজন্য ওয়ার্ড কোটা এক শতাংশ কমিয়ে ৪ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’