জবিতে ৩৬ মণ্ডপে সরস্বতী পূজা

দেবীর চরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, বাণী অর্চনা ও প্রসাদ বিতরণসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে সাড়ম্বরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) উদযাপিত হয়েছে বিদ্যা, বাণী ও সুরের দেবী সরস্বতীর পূজা।

এবছর জবিতে একযোগে ৩৬ মণ্ডপে পূজা উদযাপিত হয়। ৩৩টি বিভাগ, দুটি ইনস্টিটিউট ও ছাত্রী হলের মণ্ডপে করা হয়েছে পূজার আয়োজন। মণ্ডপগুলোতে রাখা হয়েছে সৃজনশীলতার ছাপ, নিজ নিজ বিভাগের আদলে সাজানো হয়েছে মণ্ডপগুলো। মণ্ডপগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছাড়াও আশেপাশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ও ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মানুষ ভিড় করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. পরিমল বালা বলেন, সরস্বতী পূজার মাধ্যমে অন্ধকার থেকে আলোতে যাত্রার প্রার্থনা করা হয়ে থাকে। প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সারা বিশ্বের অন্ধকার দূরীভূত হবে এবং আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠার জন্য প্রার্থনা করা হয় এদিন। সর্বোচ্চ শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে নির্বিঘ্নভাবে যাতে পূজা অনুষ্ঠিত হয় আমরা চেষ্টা করছি।

এর আগে সকালে সকালে বাণী অর্চনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় পূজার আনুষ্ঠানিকতা। মণ্ডপগুলোতে সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা বিদ্যার দেবীর সামনে প্রার্থনায় অংশ নেন। পূজা শেষে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।

পরে বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক মণ্ডপগুলো ঘুরে দেখেন।

ছাত্রী হলের মণ্ডপে পূজা করতে আসা শিক্ষার্থী মৈত্রী বাড়ৈ বলেন, দেবী খুশি হলে আমাদের বিদ্যা ও জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে, তাই আমরা সরস্বতী দেবীর পূজা করি। সকালে অঞ্জলি দিয়ে, দেবীর কাছে প্রার্থনা করেছি।

সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ছাড়াও ক্যাম্পাসে সমান উপস্থিতি রয়েছে মুসলিম-খ্রিষ্টান-বৌদ্ধ শিক্ষার্থীদের। মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে প্রতিমা ও পূজা দেখে, প্রসাদ গ্রহণ করে সনাতন ধর্মাবলম্বী সহপাঠীদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করছেন তারা।

পূজা দেখতে আসা পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী মেহরাব অপি বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বী সহপাঠীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা আজ। সহপাঠীদের দাওয়াতে পূজায় এসেছি, মণ্ডপ ঘুরছি, খাওয়া-দাওয়া করছি। একসঙ্গে এতগুলো মণ্ডপ দেখে ভালো লাগছে।

রাজধানীর সূত্রাপুর থেকে পরিবার নিয়ে পূজা দেখতে আসা রিয়া দেবনাথ বলেন, পরিবার নিয়ে মণ্ডপ দেখছি। জগন্নাথে একসাথে ৩৬টা মণ্ডপ, ডিজাইনগুলোও ব্যতিক্রম, দেখতে ভালো লাগছে।

নিরাপত্তার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, সুন্দরভাবে পূজা উদযাপন করতে আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। নিরাপত্তার জন্য প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ছাড়াও পুলিশ ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্যরা ক্যাম্পাসে কাজ করেছেন।