সিটে তোলেন প্রাধ্যক্ষ, নামায় ছাত্রলীগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ১৩৫ নম্বর কক্ষের এক আবাসিক ছাত্রকে গত তিন দিনে কয়েক দফা সিট থেকে নামিয়ে দিয়েছে ছাত্রলীগ। বিষয়টি হল প্রাধ্যক্ষকে একাধিকবার জানানোর পরও সমাধান হয়নি।

এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বৃহস্পতিবার দুপুরে বিছানাপত্র নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেন। পরে প্রক্টরিয়াল বডির হস্তক্ষেপে সিটে ওঠেন ওই শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম জাকির হোসেন। তিনি উর্দু বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। জাকির শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ১৩৫ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মোমিন ইসলাম হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।

হল, ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শহীদ শামসুজ্জোহ হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ইকরামুল ইসলাম জাকিরকে সম্প্রতি ১৩৫ নম্বর কক্ষ বরাদ্দ দেন। এরপর দুই বেডের ওই কক্ষের একটি সিটে ওঠেন তিনি। কিন্তু হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ৩১ জানুয়ারি রাতে জাকিরকে হল থেকে নামিয়ে দেন।

পরে হল প্রাধ্যক্ষকে জানিয়ে ফের সিটে ওঠেন তিনি। গত বুধবার রাতে আবারও জাকিরকে সিট থেকে নামিয়ে দেন মোমিনের অনুসারীরা এবং ওই সিটে ছাত্রলীগের এক কর্মীকে জায়গা দেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, জাকিরের বিছানাপত্র রুমের সামনে পড়ে আছে। অন্যদিকে তার সিটে অন্য একজন শিক্ষার্থী অবস্থান করছে। কথা বলে জানা গেছে, ওই শিক্ষার্থীর আবাসিকতা রয়েছে ৩০৭ নম্বর কক্ষে।

এই কক্ষে ওঠার বিষয়ে জানতে চাইলে ওই শিক্ষার্থী নিজেকে ছাত্রলীগ কর্মী দাবি করে বলেন, ‘আমি রাজনীতি করি। আমাকে হল ছাত্রলীগের এক বড় ভাই এখানে তুলেছেন। আমি বিছানাপত্র সরাইনি। বড় ভাইরা বিছানাপত্র ফেলেছেন।’

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জাকির হোসেন বলেন, আমার বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও গত কয়েক দিনে যা ঘটল, এতে আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। আমি ইনকোর্স পরীক্ষাও দিতে পারিনি। এর বিচার আমি চাই।’

সিট থেকে নামানো বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোমিন ইসলাম বলেন, ‘ওই কক্ষে আমাদেরই (ছাত্রলীগ) এক বড় ভাই থাকতেন। সেখানে আমাদের অন্য একজন ওঠার কথা ছিল। প্রাধ্যক্ষ স্যারও মৌখিকভাবে বলেছেন ওঠাতে। তাই ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী জাকিরকে নামিয়ে  দিয়েছে।’

শহীদ শামসুজ্জোহা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক একরামুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনা ঘটার সময় আমি পরীক্ষার ডিউটিতে ছিলাম। আমি তাকে অপেক্ষা করতে বলি। কিন্তু আমার আসতে দেরি হওয়ায় সে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। এরপর আমি প্রশাসনের সহযোগিতায় তাকে একই সিটে তুলে দিয়েছি।’