ভূমিকম্পে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন আবাসিক হলে ফাটল

ভূমিকম্পে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, কাজী নজরুল ইসলাম হল ও নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে এই ভূকম্পন অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে ৫.৫ মাত্রার  ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে বলে জানা গেছে। এতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের দুইটি ও মেয়েদের একটি হলে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া, মেয়েদের শেখ হাসিনা হলের রিডিং রুমেও হালকা ফাটলের দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বঙ্গবন্ধু হলের পাঁচতলার দক্ষিণ পাশের ব্লকের ৫০৪ নম্বর কক্ষের সামনের করিডরের মেঝের দুটি টাইলস উঠে গেছে। একই তলায় নতুন ও পুরাতন ব্লকের সংযোগস্থলের করিডরে ফাটল দেখা গেছে। পাশাপাশি দক্ষিণ ২০৪ ও ২০৫ নং কক্ষের মাঝের সংযোগস্থলে পুরো পাঁচতলায় ফাটল তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া ২০৯নং কক্ষেও ফাটল দেখা যায়।

নজরুল হলের দোতালার ২০৭ নম্বর কক্ষের দেয়ালে, টিভি রুমের সামনের পিলারের সংযোগস্থলে; ফয়জুন্নেছা হলের পাঁচতলার ৫১১ নম্বর কক্ষে, ৫০৩ নম্বর কক্ষের ফাটল ও চারতলার ৪০৩ নম্বর সামনের করিডরে ফাটল দেখা গেছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৫১৯ নং কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী এমরান হোসেন বলেন, ভূমিকম্পের সময় আমরা নিচে নামতে পারিনি। কম্পন থামলে দক্ষিণ ব্লকে পাশাপাশি দুটি টাইলস উপরের দিকে হালকা উঠে গেছে।

কাজী নজরুল ইসলাম হলের ২০৭ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী এহসান বলেন, প্রথমে আমরা কিছু বুঝতে পারিনি। ঝাঁকুনির মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা সবাই দৌড়ে বাইরে চলে যাই। কিছুক্ষণ পর রুমে এসে দেখি দেওয়ালে ছোট বড় কিছু ফাটল তৈরি হয়েছে।

নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সুমাইয়া চৌধুরী আনিকা বলেন, প্রথমে ছোটোখাটো কম্পন ভেবে রুমের দিকে আসছিলাম সবাইকে বলতে যে, এত নড়তেছে কেন। আজকে গাড়ি যাওয়াতে ফয়জুন্নেসার পাশ দিয়ে প্রতিনিয়ত কন্সট্রাকশনের কাজের জন্য বড় বড় মালবাহী গাড়ি যাওয়াতে হালকা কেঁপে ওঠে। কিন্তু গোসলখানা থেকে রুমে আসার পথে দেখি ছাদ আর আমার রুমের পাশের জয়েন্ট আলাদা হয়ে  যাচ্ছে। বুঝতে বাকি নেই ভূমিকম্প। 

হল প্রভোস্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা পুরো বিষয়টা পর্যবেক্ষণ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

যোগাযোগের পর বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট সরেজমিনে ফাটলগুলো পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দফতরে কথা বলবেন বিষয়টি দেখার জন্য।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) আবদুল লতিফ বলেন, আমি বিষয়টা জানতাম না, আপনার থেকে শুনেছি। যদি স্ট্রাকচারাল কোনও সমস্যা হয় তবে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেব। যদি সত্যিই ভূমিকম্পের কারণে স্ট্রাকচারাল কোনও সমস্যা হয় তা অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ। এই বিষয়ে আমরা নিজেরা খোঁজ নিয়ে এক্সপার্টদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।