জাবিতে অছাত্রদের হল ত্যাগের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হচ্ছে আজ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অছাত্রদের হল ত্যাগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হচ্ছে আজ (১৭ এপ্রিল)।

এর আগে, ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে অছাত্রদের হল ছাড়ার এই তারিখ ঘোষণা করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরুল আলম। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশনা দেওয়া হয়। অন্যথায় সনদ বাতিল ও তাদের বিরুদ্ধে মামলার হুঁশিয়ারি দেন উপাচার্য। ১০ মার্চ উপাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে স্বামীকে আটকে রেখে বহিরাগত নারীকে ধর্ষণের ঘটনার পর মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভায় পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে অছাত্রদের হল থেকে বের করার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে অছাত্রদের হল থেকে বের করতে ব্যর্থ হলে পরবর্তীতে ৩০ কর্মদিবস সময় নেয় প্রশাসন। এরপরও অছাত্রদের হল থেকে বের করতে না পারলে সর্বশেষ ১৭ এপ্রিলের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেন উপাচার্য। ১৭ এপ্রিলের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা হল না ছাড়লে তাদের সনদ বাতিল ও মামলা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

পরপর দুইবার অছাত্রদের হল থেকে বের করার সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে ব্যর্থ হওয়ায় ১৭ এপ্রিলের ঘোষণার বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, আমরা সবাই চাই হল থেকে অছাত্ররা দ্রুত বের হয়ে যাক। যে দলের মতের হোক না কেন অছাত্রদের হল থেকে বের করা হবে এটাই আমাদের দাবি।

অছাত্রদের হল থেকে বের করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসা ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আলিফ মাহমুদ বলেন, উপাচার্য  সিন্ডিকেট সভা ডেকে ১৭ এপ্রিলের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের বের করবেন বলে কথা দিয়েছিলেন। আমরা তার কথার ওপর আস্থা রেখে আন্দোলন স্থগিত করেছিলাম। কিন্তু আজ ১৭ তারিখ এলেও আমরা উপাচার্যের কথার প্রতিফলন দেখতে পারছি না। তিনি বারবার সিন্ডিকেট ডেকে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিলেও যে মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কলঙ্কিত হচ্ছে, তাদের ব্যাপারে কোনও আইনের বাস্তবায়ন করতে পারছেন না। মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাই সিন্ডিকেটের আইন অমান্য করে হলেও প্রশাসন তাদের আবাসন সুবিধা দিয়ে যাওয়ার পাঁয়তারা করছে। উপাচার্য তার কথা না রাখতে পারলে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে জানতে উপাচার্যের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।