রাস্তায় বর্জ্য ফেললে জরিমানা!

বিনরাস্তায় বর্জ্য ফেললে এবার দোষীদের জেল-জরিমানা করার চিন্তাভাবনা করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী এ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কর্মকর্তারা জানান, ভালো ব্যবহার করেও সুফল আসছে না। তাই এবার আইন প্রয়োগ করে যেখানে-সেখানে বর্জ্য ফেলা বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
নগরীর গুলিস্তান কমপ্লেক্স থেকে গোলাপশাহ মাজার পর্যন্ত সড়কের এক পাশ পুরোটা দখল করে ফল ও অন্যান্য সামগ্রীর বাজার বসে প্রতিদিন। সারাবছর এখানে আঙুর-আপেল বিক্রি হয়। গত দু’সপ্তাহ ধরে ফলের বাজারে যোগ হয়েছে লিচু, আম ও আনারস। দেখা গেছে, সতেজ দেখানোর জন্য আম ও লিচুর সঙ্গে গাছের পাতা রাখা হয়। ফলগুলো বিক্রি করার পর এসব পাতা সড়কের ওপর ফেলা হয়। এ ব্যাপারে হকার আলম তালুকদার বলেন, লিচুর পাতা সরাতে লাইনম্যান আলাদা টাকা নেন। এ কাজটা তারই দায়িত্ব। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এত পাতা আমরা কোথায় নিয়ে যাব?
শুধু গুলিস্তান নয়, নগরীর মালিবাগ, মিরপুর-১, কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়ী, ফকিরাপুল, ওয়াইজঘাট প্রভৃতি এলাকায়ও একই চিত্র দেখা যায়। বাজার ও আড়তের প্রতিটি পথে ফলের বর্জ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আর, ডাস্টবিনের আশপাশটা উপচে পড়ছে ফলবর্জ্যে।
অন্যদিকে, হাতে থাকা বর্জ্য নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার জন্য ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রায় ছয় হাজার বিন স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু এতে সুফল খুব একটা আসছে না। বেশ কিছু বিন ইতোমধ্যে চুরি হয়ে গেছে। এ ছাড়া বেশির ভাগ বিন থাকছে খালি। লোকজন বিনে ময়লা না ফেলে রাস্তার ওপর ফেলছে।

রাস্তায় লিচুর পাতা

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা খোন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি ঢাকাকে পরিষ্কার রাখতে। কিন্তু অনেকেই সহযোগিতা করছেন না। এ কারণে বেশ কিছুদিন ধরে অবৈধ দখল, রাস্তায় ব্যানার-পোস্টার লাগানো ইত্যাদির বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। এবার যেখানে-সেখানে বর্জ্য ফেলা ঠেকাতেও মোবাইল কোর্ট পরিচালনার চিন্তাভাবনা চলছে। তিনি জানান, ঢাকা দক্ষিণে দৈনিক প্রায় আড়াই হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য হয়। গ্রীষ্ম-বর্ষায় যোগ হয় ফলবর্জ্য। বর্তমানে প্রতিদিন অতিরিক্ত প্রায় ৭০০ টন ফলবর্জ্য উৎপন্ন হওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বাজার ও আড়তগুলোর সামনে সবচাইতে খারাপ অবস্থা। ব্যবসায়ীরা যদি সুষ্ঠুভাবে ফলবর্জ্য নির্দিষ্ট জায়গায় রাখতেন, তাহলে আমাদের এত কষ্ট হতো না। তিনি বলেন, এখন তো আম-লিচুর বর্জ্য। আর ক’দিন পর কাঠাল উঠলে বর্জ্যের পরিমাণ আরও বাড়বে।

জানা গেছে, বর্তমানে ঢাকার ‍দুই সিটিতে যে বর্জ্য উৎপন্ন হয় তার পুরোটা অপসারণ করা হয় না। বেশ কিছু বর্জ্য সারাক্ষণ রাস্তায় পড়ে থাকে। আরেকটি অংশ চলে যায় ড্রেনেজ লাইনে।

আরও পড়তে পারেন: ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসককে তনুর বাবার লিগ্যাল নোটিশ

/ওএফ/এমএনএইচ/