অপারেশন থান্ডারবোল্ট

শনিবার সকালে কমান্ডো অভিযান চালানো হয়

সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশন্সের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাঈম আশফাক চৌধুরী শনিবার প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, রাজধানীর গুলশানে হোলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে  ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট' পরিচালিত  হয়।

তিনি তার বক্তব্যের শুরুতেই ঘটনার সূত্রপাত নিয়ে বলেন, গতকাল শুক্রবার (১ জুলাই) রাত পৌনে নয়টায় রাজধানী গুলশান ২-এর হোলি আর্টিজান বেকারি নামক একটি রেস্টুরেন্টে দুষ্কৃতিকারীরা গুলি ছুড়তে ছুড়তে ভেতরে প্রবেশ করে। এবং রেস্টুরেন্টে সকলকে জিম্মি করে।  ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরবর্তীতে পুলিশ কর্ডন করে সন্ত্রাসীদের যথেচ্ছ কর্মকাণ্ড থেকে নিবৃত করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি, পুলিশ ও র‌্যাব যে সাহসিকতা,আন্তরিকতা, পেশাদারিত্ব প্রদর্শন করেছেন তা অমূল্য। তাদের এ অভিযানকালে দুজন সাহসী পুলিশ অফিসার শাহাদাতবরণ করেন এবং ২০ জনের অধিক পুলিশ সদস্য আহত হন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাঈম আশফাক চৌধুরী জানান- অভিযান পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সরকার প্রধান কর্তৃক আদেশ দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অপারেশন থান্ডারবোল্ট পরিকল্পনা করে।

তিনি আরও জানান, সেনাবাহিনী গতকাল রাত থেকে ঘটনাস্থলে অবস্থানরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অন্য বাহিনীর সদস্যদের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে। সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে নৌ বাহিনী, বিমান বাহিনী,  বিজিবি, পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা সম্মিলিতভাবে অপারেশন থানডার বোল্ট পরিচালনা করে।   

প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি উল্লেখ করেন, এই সকাল সাতটা চল্লিশে অপারেশন শুরু হয়। ১২-১৩ মিনিটের মধ্যে সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা হয়। সাড়ে আটটায় অপারেশন সমাপ্ত করা হয়। 

রেস্টুরেন্টে জিম্মিদের বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি উল্লেখ করেন, অভিযানের মাধ্যমে ৩ জন বিদেশি যার মধ্যে ১ জন জাপানি এবং ২ জন শ্রীলঙ্কান নাগরিকসহ মোট ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। আর  অভিযানের পর তল্লাশি শেষে ২০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। যাদের অধিকাংশকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় বলেও তিনি নিশ্চিত করেন। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে  মৃতদেহগুলোর ময়নাতদন্তের কাজ সম্পন্ন করা হবে জানান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনের পরিচালক।

নিহতদের পরিচয় নিশ্চিতকরণ বা কোনও জিজ্ঞাসার থাকলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষে  একটি একটি নম্বরও দেওয়া হয়। নাম্বারটি হলো ০১৭৬৯০১২৫২৪।

সন্ত্রাসীদের বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি জানান, তাদের ৭ জনের মধ্যে ৬ জন নিহত এবং ১ জনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করা হয়।

এছাড়াও  প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থল থেকে সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত পিস্তল, ফোল্ডেট বাঁট একে ২২ রাইফেল, বিস্ফোরিত আইইডি, ওয়াকিটকি সেট ও অনেক ধারালো দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

এসএএস/এপিএইচ/  

আরও পড়ুন: 

কমান্ডো বাহিনী সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে, প্রস্তুত ৯ অ্যাম্বুলেন্স 

কমান্ডো অভিযানে মাত্র ১০ ঘণ্টার মধ্যে গুলশানে জিম্মি সংকটের অবসান: প্রধানমন্ত্রী

সিএনএন-এর বিশ্লেষণ: মে মাসে প্রকাশিত অডিও বার্তার ছকেই হামলা চালাচ্ছে আইএস!