জ্ঞান ও প্রযুক্তির সেতুবন্ধন করাই আমাদের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী

ডাভোসে প্রধানমন্ত্রীপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশের লাখ লাখ যুবশক্তির সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনী শক্তির বিকাশে বাংলাদেশ বৈশ্বিক জ্ঞান এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগকে স্বাগত জানাবে। এতে নিশ্চিতভাবেই উভয় পক্ষই লাভবান হবে। আমাদের সমাজ এবং বহির্বিশ্বের সঙ্গে জ্ঞান ও প্রযুক্তির সেতুবন্ধন করাই আমাদের লক্ষ্য।’

সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়  ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ‘ডিজিটাল লিডারস’ পলিসি মিটিং অন জব’ শীর্ষক সেশনে বিশেষ অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। স্থানীয় শেরাটন হোটেলে এই সেশনটি অনুষ্ঠিত হয়।

ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের সাফল্যগাঁথা সবার সামনে উপস্থাপনের জন্য এবছর ডব্লিউইএফ তাদের বিশেষ অতিথি এবং প্যানেল আলোচক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মনোনীত করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তথ্য প্রযুক্তির প্রসারের কারণে বাংলাদেশ তার যুব সম্প্রদায়ের সঙ্গে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মেলবন্ধন ঘটাতে চায়।  বর্তমান সময় থেকে অন্তত আগামী তিন দশক পর্যন্ত আমরা জনসংখ্যার একটি বড়ো অংশ হিসেবে পাবো যুব সমাজ।’

দেশের জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশের বয়স ১০ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জনগণ যেকোনও প্রযুক্তি বিশেষ করে বর্তমানকালের তথ্য প্রযুক্তি যেন দ্রুত গ্রহণ করতে পারে তেমনি এর সঙ্গে খাপ খাওয়াতেও পারে। বিশ্বে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান ১০ম স্থানে। ৬ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। যার অধিকাংশই স্মার্টফোনের সাহায্যে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই সপ্তাহজুড়ে ডাভোসের আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে আগামীর উৎপাদন, কর্মকাণ্ড, প্রযুক্তি এবং এ সম্পর্কিত নানা বিষয়। ডব্লিউইএফ নির্বাহী চেয়ারম্যান ক্লাউস সোয়াব ব্যাখ্যা করেছেন আগের যেকোনও সময়ের চেয়ে এখন বিশ্বের কর্মপন্থা এবং উৎপাদন ব্যবস্থা পরিবর্তিত হচ্ছে। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে প্রযুক্তি আমাদের জীবন এবং জীবনমানকে উন্নত করেছে। সবাই যেন এই পরিবর্তনের ছোঁয়া পায় তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে যে প্রযুক্তি আমাদের উন্নয়নের জন্য তা যেন কোনোভাবেই বিঘ্ন সৃষ্টির কারণ না হয়।’

প্রধানমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ এখন একটি বৃহৎ ই-লার্নিং প্লাটফর্ম ডেভেলপ করছে যার নাম মুক্তপথ। এ প্লাটফর্মটির মাধ্যমে যেকোনও স্থান থেকে বাংলাদেশিরা তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করে কর্মসংস্থান তৈরি করে নিতে পারবেন। তিনি বলেন, ‘এটা হলো আমাদের তারুণ্যকে এ কর্মমুখী বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা।’

বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকে থাকতে কারিগরি শিক্ষার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার টেকনিক্যাল অ্যান্ড ভকেশনাল এডুকেশন ট্রেনিং (টিভিইটি) কে শিক্ষার্থীদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য ‘থ্রি সিক্সটি ডিগ্রি হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট মিডিয়া প্লাটফর্ম’ গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন বিশ্বজুড়ে কাজ করা আইটি ফ্রিল্যান্সারদের অন্যতম বড় ক্ষেত্র বাংলাদেশ। আমরা এখন নারী ফ্রিল্যান্সার গড়ে তোলার ওপর জোর দিচ্ছি। জোর দিচ্ছি দুর্গম ও সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় ফ্রিল্যান্সার তৈরিতেও। সারাদেশে বর্তমানে প্রায় ৫ লাখ আইট ফ্রিল্যান্সার রয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

দেশব্যাপী সাড়ে ৪ হাজার ডিজিটাল সেন্টার থাকার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর ফলে বাংলাদেশের প্রতিটি অলি-গলি এখন একটি অপরটির সঙ্গে সংযুক্ত। সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে। মানুষের অর্থ-শ্রম দু’টোই বাঁচছে, কাজের নতুন নতুন ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।’ সূত্র: বাসস।

/এফএস/ 

আরও পড়ুন- 

ইজতেমা ময়দান থেকে মিয়ানমারের ১৫২ নাগরিককে ফেরত
তনু হত্যাকাণ্ডের ১০ মাস: এখনও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে অপরাধীরা