শুক্রাবাদে শিশুদের নির্মিত শহীদ মিনারএকুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জন্য গৌরবোজ্জ্বল একটি দিন। শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সর্বস্তরের মানুষ শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস পালন করছেন। মঙ্গলবার একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুধু কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারই নয়, রাজধানীর পাড়ায় পাড়ায় শহীদদের স্মরণে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী শহীদ মিনার। এসব শহীদ মিনারের বেশির ভাগ বানিয়েছে শিশুরা। মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে বানানো অস্থায়ী শহীদ মিনারগুলোকে ঘিরে শিশুদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো।।
শুক্রাবাদে শিশুদের নির্মিত শহীদ মিনার রাজধানীর মিরপুর, আগারগাঁও, মোহাম্মদপুর, শুক্রবাদসহ বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় অস্থায়ী এসব শহীদ মিনার তৈরি করেছে স্থানীয়রা। কোথাও কাঁদা মাটি আর ইট, কোথাও কাঠ, কোথাও বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে শহীদ মিনারগুলো। জাতীয় পতাকা দিয়ে সাজানো শহীদ মিনারের বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবদেন করা হয়েছে । মাটি, ইট কিংবা বাঁশ, যা দিয়েই তৈরি হোক না কেন, কোথাও শ্রদ্ধার কমতি ছিল না। কোনও কোনও স্থানে বাজানো হচ্ছে দেশাত্ববোধক গান। আবার কোথাও চলছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, দেয়ালিকা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা।
আগারগাঁওয়ে বাঁশ দিয়ে তৈরি শহীদ মিনাররাজধানীর মিরপুরে দিয়াবাড়ি এলাকায় একটি বাড়ির সামনের গেটে একুশে ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করে আঁকা ছবি সুতোয় ঝুলিয়ে প্রদর্শন করে শিশু-কিশোররা। শহীদ মিনার আর বর্ণমালা দিয়ে আঁকা হয়েছে ছবিগুলো। এ আয়োজন প্রসঙ্গে উদ্যোক্তাদের একজন সাদমান বলেন, ‘আমরা কয়েকজন মিলে ঠিক করেছিলাম ছবি প্রর্দশনী করবো। এজন্য কয়েকজন মিলে এলাকার অন্যদের আগে থেকে জানিয়ে দিয়েছিলাম ছবি এঁকে দিতে। আমরা ওই ছবিগুলো দিয়েই বাড়ির সামনে প্রদর্শনী করছি। সবাই দেখে ভালো বলছে, এটা শুনে আমাদেরও ভালো লাগেছে।’
১৯৫২ সালের এই দিনে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রাখতে গিয়ে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন রফিক, সালাম, বরকত, শফিউর, জব্বারসহ অনেকে। তাদের রক্তে মায়ের ভাষা ফিরে পেয়েছে বাঙালি জাতি। একুশের এই দিনে কৃতজ্ঞচিত্তে ভাষা শহীদদের স্মরণ করে আসছে দেশবাসী। প্রাপ্ত বয়স্কদের মতো শিশু-কিশোররাও প্রকাশ করছে নিজেদের অনুভূতি।
শহীদ দিবস উপলক্ষে রাজধানীর মিরপুরে শিশুরা আয়োজন করে ছবি প্রদর্শনীররাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাঁশ দিয়ে শহীদ মিনার -এর সামনে দেখা গেলো কয়েকজন শিশু কিশোরকে। আশরাফুল ইসলাম অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। শহীদ মিনার নির্মাণ প্রসঙ্গে জানায়, আমরা প্রতিবছর শহীদ মিনার বানানোর চেষ্টা করি। এ বছরও এলাকার বন্ধুরা মিলে বানিয়েছি। এখন এলাকার অনেকেই এখানে এসে ফুল দেয়।
ভাষার জন্য শহীদদের আত্মত্যাগের ইতিহাসও জানে শিশু-কিশোররা। কল্যাণপুর মাটি আর ইট দিয়ে বানানো শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধায় তা ফুটে উঠেছে। একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে জানতে চাইলে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আবিদ আলম বলে, ‘একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি জড়িত একটি দিন। ১৯৫২ সালের এই দিনে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলন করেত গিয়ে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন অনেকে। এজন্য দিনটি শহীদ দিবস ‘
শহীদ মিনারের সামনে আবিদের পাশে দাঁড়িয়ে মিনহাজ, রাজা, রুহুল আমিন, তমাল। তারাও জানায়,ভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আমরা শহীদ মিনার বানিয়েছি।
রাজধানীর শুক্রবাদ এলাকায়ও দেখা গেছেম মাটি আর ইটের তৈরি শহীদ মিনার।
/সিএ/এপিএইচ/
আরও পড়ুন:
ফেসবুকজুড়ে একুশের গান, একুশই প্রাণ
ভাষা আন্দোলনের সাক্ষী সেই আম গাছটির শেষ রক্ষা হয়নি
একুশে ফেব্রুয়ারি ভুলে গেছে পুলিশ!
বিজ্ঞাপনে বদলে গেছে একুশ!
ব্রিটেনে যতো শহীদ মিনার