শহীদ মিনারের ওপরে জুতা পরে হাঁটলেন শিক্ষকরা

শহীদ মিনারে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সমাবেশ। ছবি: ফোকাস বাংলা

শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি। কিন্তু কিছু কর্মকাণ্ডে নিজেদেরই বিতর্কিত করে তুলেছেন শিক্ষকরা। শহীদ মিনারের মূল বেদিতে জুতা পরে হাঁটা, সেলফি তোলা, পানের পিক ফেলা এমনকি চাদর বিছিয়ে ঘুমানোর চেষ্টাও করেছেন তারা।

শহীদ মিনারের মূল বেদিতে জুতা পরে উঠে পড়েন শিক্ষকরা। ছবি: ফোকাস বাংলা

বুধবার সকালে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে উপস্থিত হনমাধ্যমিক স্কুলের কয়েক হাজার শিক্ষক। শহীদ মিনারের উত্তর দিকে তৈরি করা মঞ্চে বক্তব্য রাখেন শিক্ষকরা। এসময় দেখা যায়, মূল বেদিতে বসে আছেন শতাধিক শিক্ষক। কয়েকজন লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ বা জুতা পরে ঘুরছেন। কেউ জুতা রেখে দিয়েছেন বেদির ওপরেই। কয়েকজন শিক্ষককে শুয়ে বিশ্রাম করতেও দেখা গেছে। 

শহীদ মিনারের ওপরে জুতা রেখে দিয়েছেন শিক্ষকরাজুতা পরে মূল বেদিতে ঘুরছিলেন নরসিংদীর বুনিয়ারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল খায়ের। নিষেধাজ্ঞা থাকলেও শহীদ মিনারের ওপরে কেন জুতা পরে হাঁটছেন জানতে চাইলে তিনি সঙ্গে-সঙ্গে জুতা খুলে হাতে নিয়ে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘ভুল হয়ে গিয়েছে, বুঝতে পারিনি। আমি জানি এখানে জুতা পায়ে ওঠা ঠিক না। ভুল করে উঠে পড়েছি।’ এ কথা বলতে বলতে তিনি বেদি থেকে নেমে যান।  

চাদর বিছিয়ে শুয়ে আছেন শিক্ষকরাঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার পুটিয়াখালি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক চাদর বিছিয়ে শুয়েছিলেন বেদির ওপরে। এখানে কেন শুয়ে আছেন জানতে চাইলে একজন শিক্ষক বলেন, ‘অনেকেই শুয়ে আছে তো, তাই আমরাও শুয়েছিলাম।’ পাশ থেকে আরেকজন শিক্ষক বলেন, ‘বহুদূর থেকে এসেছি, খুব ক্লান্ত। তাই একটু শুয়েছি।’ তবে শহীদ মিনারের ওপরে বসা ও শোয়া যে নিষেধ, সেটা তারা জানেন এবং কাজটা ঠিক হয়নি বলে স্বীকারও করেন। 

জুতা পরে না ওঠার নির্দেশসংবিধানের ১০২ নং অনুচ্ছেদ ও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী, শহীদ মিনারের আশেপাশে ভবঘুরেদের অবস্থান, অসামাজিক কার্যকলাপ ও মূল বেদিতে মিটিং-মিছিল ও পদচারণা নিষিদ্ধ। শহীদ মিনারের সামনে এসব নিয়ম লেখা একটি নোটিশ বোর্ডও আছে। তবে নিয়ম মানার তোয়াক্কা করে না অনেকেই। প্রায়ই বিভিন্ন পেশাজীবী, সামাজিক সংগঠন শহীদ মিনারে সভা-সমাবেশ করে। 

সমাবেশে শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ ছাড়াও ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট, পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, নববর্ষ ভাতার দাবি জানান শিক্ষকরা। এসময় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবু বকর সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কাশেম সহ কয়েকজন শিক্ষক নেতা।

এএআর/