রবিবার (৩০ এপ্রিল) সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় হাওর এলাকা হাওর এলাকা পরিদর্শনের পর উপজেলার শাহীদ আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে এক মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হাওর অঞ্চলের মানুষ প্রতিনিয়ত জীবনযুদ্ধে থাকে। বাওর এলাকা আমারও এলাকা, আমি বুঝি আপনাদের কষ্ট। এসব এলাকার মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই এসব এলাকায় বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা করা হবে। শুধু ফসলের ওপর নির্ভরশীল না থেকে মাছের উৎপাদন বাড়াতে হবে। মাছ উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গে মাছের সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাত ও বাজারজাতের ব্যবস্থা যেন নেওয়া হয়, সে ব্যবস্থা করা হবে।’
আগাম বন্যা হলেই হাওর এলাকার ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে সহনীয় ধানের জাত তৈরিতে গবেষণা চলছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘এমন ধানের জাত নিয়ে গবেষণা চলছে, যেগুলো কিছুদিন পানির নিচে থাকলেও নষ্ট হবে না। পানি নেমে গেলেই সেগুলো ঠিকভাবে বেড়ে উঠবে। এছাড়া অনেক সময় বৃষ্টি হয় না। অনাবৃষ্টি বা খরাতেও যেন ধান গাছ টিকে থাকতে পারে, তেমন ধান নিয়েও গবেষণা চলছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের হাওর বাঁচিয়ে রাখতে হবে। কারণ হাওরে যে পানি জমা হয়, এই পানিই সারাবছর নদীতে যায়। এই পানি এই এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার সঙ্গে সম্পৃক্ত।’
দুর্যোগে ত্রাণ তৎপরতা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোনও ধরনের দুর্যোগ হলেই ত্রাণ মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করে। আমরা যতটুকু সম্ভব, ত্রাণ দিয়ে যাব। হাওর এলাকায় ১০ টাকা কেজিতে ওএমএসের মাধ্যমে চাল বিক্রি করা হচ্ছে। যারা দুঃস্থ আছেন, তাদের জন্য রয়েছে ভিজিএফ কার্ডের ব্যবস্থা। এই অঞ্চলের মানুষের ঘরে খাবার আসার আগ পর্যন্ত এসব সহায়তা অব্যাহত থাকবে। একজন মানুষও না খেয়ে কষ্ট পাবেন না, এটাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা চাই, আমাদের দেশের মানুষ, তিনি যে অঞ্চলেরই হোক না কেন, তারা যেন ভালোভাবে বাঁচতে পারে।’
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, দুর্যোগ ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম ও স্থানীয় সংসদ সদস্য জয়া সেনগুপ্তা।
আরও পড়ুন-
হাওরাঞ্চলে আবাসিক স্কুল নির্মাণ করা হবে: প্রধানমন্ত্রী
বিচার শেষ হওয়ার আগে ‘রাজাকার’ লেখা যাবে না
/ইউআই/টিআর/এসটি/