প্রতিবছরের মতো এবারও ঈদকে সামনে রেখে ১০ থেকে ১২টি স্পেশাল সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) ও বেসরকারি লঞ্চ মালিকরা। কিন্তু এই লঞ্চ প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই কম। এছাড়া এ সময় যাত্রীদের ভিড় বেশি থাকায় লঞ্চের ধারণ ক্ষমতার কয়েকগুণ বেশি যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরু করে।
শনিবার (১০ জুন) দুপুরে বুড়িগঙ্গার তীরে গড়ে ওঠা চরকালিগঞ্জ ও চরমিরেরবাগ এলাকার ডকইয়ার্ডগুলোতে দেখা গেছে- টুংটাং শব্দে চলছে যাত্রীবাহী ও বড় কার্গোবাহী লঞ্চগুলোর মেরামত কাজ। সকাল থেকে রাত অবধি শ্রমিকরা খুব ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কেউ ওয়েলডিং আবার কেউ রঙ মাখাতে ব্যস্ত। ঈদের আগে জোড়াতালি দিয়ে তড়িঘড়ি করে লঞ্চগুলো মেরামত করা হচ্ছে।
তবে বিআইডাব্লিউটিএর নৌ-সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগ জানিয়েছে, গত ৬৬ বছরে দেশে দুই হাজার ১২২টি নৌ-দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ছয় হাজারের মতো যাত্রী নিহত হয়েছেন। মামলা হয়েছে প্রায় ২০ হাজার। এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ১৪১টি মামলা। বাকি মামলাগুলো ঝুলে রয়েছে বছরের পর বছর। কিছু মামলার কোনও হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। নিষ্পত্তি হওয়া মামলাগুলোরও উল্লেখযোগ্য কোনও শাস্তি হয়নি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসির যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘লক্কড়-ঝক্কড় লঞ্চ নদীতে নামতে দেওয়া হবে না। ঈদের পাঁচ দিন আগেই বেশ কয়েকটি মোবাইল কোর্ট থাকবে। র্যাব, পুলিশ,আনসারসহ পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলালক্ষা বাহিনীর সদস্য থাকবে। অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে কোনও লঞ্চ চলতে পারবে না। কঠোর নজরদারি থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অন্য বছরের তুলনায় এ বছর লঞ্চের বিশেষ সার্ভিস বাড়ানো হয়েছে। আশা করি ঘাটতি থাকবে না। যেসব লঞ্চ যাত্রীদের আকৃষ্ট করতে রঙ করা হচ্ছে, সেগুলোর দিকে আরও বেশি নজর রয়েছে। কোন মালিক কিভাবে ফাঁকি দিতে পারে, আমরা সবই বুঝি।’
অভ্যান্তরীণ নৌচলাচল সংস্থার (জাব) সিনিয়র সহ-সভাপতি বদিউজ্জামান বাদল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সদরঘাট থেকে যেসব লঞ্চ বিভিন্ন রুটে চলাচল করে তার কাগজপত্রে কোনও ত্রুটি নেই। ঈদের আগে প্রতিটি টার্মিনালের জাহাজগুলো চেক-আপ হয়। যেসব লঞ্চে ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে তখন সেগুলো ঠিক করতে ডকইয়ার্ডে নেওয়া হয়। তারা ত্রুটি বিচ্যুতি ঠিক করে পুরো জাহাজকে রঙ করে নেন। আর স্টিল বড়িতে যতো রঙ করা হয়, ততো ভালো থাকে।
/এসএস/এসএমএ/