শুল্ক প্রত্যাহারের আশায় চাল খালাস করে বন্দরের ওয়্যার হাউসে!

ট্রাক থেকে চাল খালাস করছেন শ্রমিকরা, ছবি: হিলি প্রতিনিধি

চাল আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহার হবে এমন আশায় আমদারিকারকরা দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে গত ৮/১০ দিন ধরে চাল ভর্তি ট্রাকগুলো আটকে রাখে। এরপর চাল খালাস করা হলেও তা রাখা হয়েছে বন্দরের ওয়্যার হাউসে। কেউ কেউ বন্দর থেকে চাল খালাস করে নিজস্ব গুদামে রাখছেন। তবে এখনও বন্দরের ভেতরে ১২৮টি ট্রাকে প্রায় ৫ হাজার টনের মতো চাল আটকা পড়ে আছে।

চাল আমদানিকারক রাজিব কুমার ও ভোলা দা জানান, বর্তমানে চাল আমদানিতে যে পরিমাণ শুল্ক রয়েছে তাতে পড়তা না থাকায় অনেক আমদানিকারক চাল আমদানি বন্ধ রেখেছেন। সম্প্রতি দেশের বাজারে চালের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দু-একজন আমদানিকারক চাল আমদানি করছেন। বর্তমানে ভারত থেকে এক কেজি চাল আমদানি করতে শুল্ক পরিশোধ করতে হয় ৯ টাকা থেকে ১০ টাকার মতো। দেশের বাজারে চালের ঘাটতি মেটাতে ও দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে চাল আমদানিতে আরোপিত শুল্ক প্রত্যাহার হবে এমন আলোচনার পর থেকেই বন্দর থেকে চাল খালাস করে নিচ্ছেন না আমদানিকারকরা।

HILI PORT RICE 04

তারা মনে করছেন, চাল খালাস করে নেওয়ার পর সরকার যদি শুল্ক প্রত্যাহার করে তাহলে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। শুল্ক প্রত্যাহার করলে বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে। প্রতি কেজি চালের দাম ৫-৭ টাকা করে কমবে।

আব্দুল মান্নান নামের এক আমদানিকারক বলেন, শুল্ক প্রত্যাহার বা রাখা নিয়ে আলোচনার কারণে বাজারে চালের দামে অস্থিরতা বিরাজ করছে। শুল্ক পরিশোধ করে আমদানিকৃত চাল নিয়ে আমদানিকারকরা বিপাকে পড়েছেন। চালের কোনও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। যেসব জায়গায় এসব চাল পাঠানো হতো এখন সবাই মনে করছেন শুল্ক প্রত্যাহার হলে চালের দাম কমে যাবে। এতে করে চালের কেনা-বেচা একেবারে কম। ফলে আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

চাল খালাস করে রাখা হচ্ছে বন্দরের ওয়ার হাউসে

হিলি স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘শুল্ক প্রত্যাহার করা হতে পারে এমন খবরের পর থেকেই আমদানিকৃত চালগুলো খালাস নেওয়া বন্ধ রেখেছিলেন আমদানিকারকরা। কিন্তু ৮/১০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও কোনও ঘোষণা না আসায় আটকা থাকা ট্রাকগুলো থেকে চাল খালাস করে শুল্ক প্রত্যাহারের আশায় বন্দরের ওয়্যার হাউসে রাখছেন। আবার দু-একজন আমদানিকারক অবশ্য চাল খালাস করে নিজস্ব গুদামে নিচ্ছেন। শুল্ক প্রত্যাহারের বিষয়টি নিয়ে তারা নিয়মিত খোঁজ খবর রাখছেন। আরও দুএকদিন অপেক্ষার পর সব আমদানিকারক হয় তো বা চালগুলো খালাস করবেন।

বন্দরে থাকা চাল ভর্তি ট্রাক

হিলি স্থলবন্দর পরিচালনাকারী পানামা হিলি পোর্ট লিংক লিমিটেডের ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজার অসিত কুমার স্যানাল জানান, এরই মধ্যে ৩০-৩৫টির মতো ট্রাক থেকে চাল খালাস করে ওয়্যার হাউজে রেখেছেন আমদানিকারকরা। শুল্ক প্রত্যাহার ও রাখা নিয়ে জটিলতার কারণে বন্দর দিয়ে চালের আমদানিও অনেকটা কমেছে।

 /এসটি/