আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বুধবার সকালের বৃষ্টিতে রাজধানী ঢাকায় ১৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ঢাকায় বা সারাদেশে টানা বৃষ্টির সম্ভাবনা কম। মেঘের বিক্ষিপ্ত সঞ্চারণের কারণেই এমন বৃষ্টি হয়েছে। এতে বিভিন্ন রাস্তাঘাট ও অলিগলিতে জলজট দেখা দিয়েছে।
মাত্র এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে ঢাকার খিলক্ষেত, বনশ্রী,রামপুরা,খিলগাঁও,বাসাবো,মতিঝিল,সদরঘাট,ইসলামপুর, নয়াবাজার,মিটফোর্ড এলাকা,নাজিরা বাজার,শাঁখারীবাজার,তাঁতীবাজার,বংশাল,ধোলাইখাল,ওয়ারী, যোগীনগর,বনগ্রাম লেন,গোপীবাগ,টিকাটুলী,পোস্তগোলা,শ্যামপুর,জুরাইন,বাবু বাজার,তেজতুরী বাজার, গ্রিন রোড,বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা,মিরপুর,মোহাম্মদপুর সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বৃষ্টির কারণে সকালে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষ পড়ে ভোগান্তিতে। স্কুলগামী শিশু ও অভিভাবকদের ভোগান্তি ছিল বেশি। যানজটও বাড়ে। অনেক বাসা বাড়িতে পানি ঢুকে পড়ে।
এ বিষয়ে ডিএসসিসির অতিরিক্ত প্রধান বর্জ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘বৃষ্টি হবেই। আমাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরাসহ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নেতৃত্বে গঠিত ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম মাঠে নেমে পড়েছে। আজও নেমে পড়েছে। আজ কোথাও মারাত্মক জলাবদ্ধতার খবর পাওয়া যায়নি। এরই মধ্যে পানি নেমে গেছে।
তবে রাজধানীর উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন খিলক্ষেত এলাকার রাস্তাঘাট আজও সামান্য বৃষ্টিতে ডুবে গেছে। গত কয়েকদিনের থেমে থেমে নামা বৃষ্টিতে রাজধানীর অন্য এলাকাগুলোর পানি নেমে গেলেও খিলক্ষেত এলাকার রাস্তাঘাট থেকে মোটেও পানি সরেনি।
লেকসিটি এলাকার বাসিন্দা আরিফ আহমেদ অভিযোগ করেন, এই এলাকার খিলক্ষেত বাজার থেকে লেকসিটি পর্যন্ত সড়কটি ভেঙেচুরে এমনই দুর্দশাগ্রস্ত যে স্বাভাবিক সময়েই চলাচল কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। আর একটু বৃষ্টি হলেই বটতলা জায়গাটি পানির নিচে ডুবে যায়। ওই জায়গাটি এমনই এবড়ো খেবড়ো যে সেখানে যখন তখন যাত্রীবাহী রিকশা ও অটোরিকশা উল্টে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। এছাড়াও বাজার থেকে উত্তরপাড়াগামী সড়কের মেয়রের মোহাম্মদী গার্মেন্টের সামনেও সামান্য বৃষ্টিতে মারাত্মক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। আজও হয়েছে। সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা লোক দেখানো কাজ করলেও সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা এখানে নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর জলাবদ্ধতার কারণে সৃষ্টি হয় মারাত্মক যানজট।
সম্প্রতি সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধানে ভরসা না দিয়ে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,জলাবদ্ধতা মোকাবিলায় ঢাকা ওয়াসা একটি মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে নগরীতে জলাবদ্ধতা আর থাকবে না। তবে এ জন্য ঢাকার অন্যান্য সেবা সংস্থাগুলোকেও একযোগে কাজ করতে হবে।
তবে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত নগরীতে কোনও বৃষ্টি না হওয়ায় অফিস ও স্কুলগামী মানুষ নির্বিঘ্নেই বের হয়েছে ঘর থেকে। আকাশে মেঘ থাকলেও কড়া রোদ ছিল কয়েক ঘণ্টা। কিন্তু সাড়ে ১০ টার পর কালো মেঘে ঢাকা পড়ে আকাশ। এতে কিছু সময় মুষলধারায় বৃষ্টি হয়। থামে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে। এ সময়ের বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা।
এদিকে সিটি নির্বাচনের পর ঢাকার দুই মেয়র বলেছিলেন,জলাবদ্ধতা নিরসনে তারা বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। নগরীতে ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলেও আর জলাবদ্ধতা দেখা দেবে না। তবে মেয়েদের সেই আশ্বাসের বাস্তবায়ন দেখতে পাচ্ছে না নগরবাসী।
আরও পড়ুন:
বিশ্বে মুসলমানরাই কেন শরণার্থী হবে, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিন: শেখ হাসিনা