প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টা সংক্রান্ত কোনও তথ্য নাই: শিল্পমন্ত্রী

শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু (ফাইল ছবি)

‘প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টা সংক্রান্ত কোনও তথ্য আমাদের কাছে নাই, কোনও সত্যতাও নাই এবং এটা নিয়ে কোনও আলোচনাও হয়নি আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে।’ শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ওই বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

রবিবার সকাল এগারোটা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত বাংলাদেশ সচিবালয়ের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। 

বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল: সম্প্রতি এ ধরনের তথ্য ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এ সংক্রান্ত কোনও তথ্য আগে থেকে ছিল কিনা সে ব্যাপারে জানতে চাইলে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টা সংক্রান্ত কোনও তথ্য আমাদের কাছে নাই, কোনও সত্যতাও নাই। তাই এ বিষয়ে কোনও আলোচনাও হয়নি আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে।’

এসময় তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুকে কেন্দ্র করে একটা শ্রেণি সাম্প্রদায়িক উস্কানি সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। ইউটিউব ও অনলাইনে বিভিন্ন রকম বিভ্রান্তিকর তথ্য ও ভিডিও ছড়াচ্ছে। অথচ এগুলোর কোনও সত্যতা নাই। ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা বরং রোহিঙ্গাদের সাহায্যে কাজ করছেন।’

এসময় রোহিঙ্গা ইস্যুতে কোনও ধরনের অপপ্রচারে কান না দেওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা পরিস্থিতি সরকার সঠিকভাবে মোকাবিলা করছে। নাফ নদীতে মাদক চোরাচালান রোধে সরকারের যে পদক্ষেপ ছিল রোহিঙ্গা সংকটের কারণে তা আপাতত স্তিমিত হয়ে আছে।’ তবে শিগগিরই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

রোহিঙ্গাদের কোনও ধরনের স্ট্যাটাস (রিফিউজি স্ট্যাটাস টাইপ) দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে আমির হোসেন আমু বলেন, ‘এ ধরনের কোনও চিন্তাভাবনা নাই। আমরা চাই তারা ফিরে যাক। তবে তাদের চিহ্নিত করা এবং শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করানো হচ্ছে।’

এ ব্যাপারে শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা এখন দেশের বড় সমস্যা। আমাদের দেশের জনসংখ্যা বেশি কিন্তু আয়তন কম। তারপরও আমাদের প্রধানমন্ত্রী মানবিক কারণে তাদের কাছে টেনে নিয়েছেন, আশ্রয় দিয়েছেন। তাদের খাদ্য ও চিকিৎসাসহ সব রকমের সহযোহিতা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত সাড়ে চার লাখ রোহিঙ্গা আমাদের দেশে এসেছে। এখনও প্রতিদিন লোক আসছে। তারা যাতে বিচ্ছিন্নভাবে বাইরে না থাকে সেজন্য বারোটি ক্যাম্প করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরও বাড়ানো হবে। এখন প্রয়োজন আন্তর্জাতিক সাহায্য বৃদ্ধি করা।’

আসন্ন দুর্গা পূজার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটা পূজা-মণ্ডপের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে যাতে দুষ্কৃতিকারীরা কোনও অঘটন ঘটাতে না পারে।’

দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।’

এসময় তিনি আরও বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন এবং হত্যা বন্ধে সরকার কঠোর হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো আসামিদের চিহ্নিত করে আইনের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে।’

তবে মাঝে মাঝে আমাদের দেশে জঙ্গিবাদ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করলেও তারা সুবিধা করতে পারছে না বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে তারা (জঙ্গিরা) পেরে উঠছে না। এখন মসজিদের ইমামরা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেন।’ সেই সঙ্গে তারা যেন মাদকের বিরুদ্ধেও কথা বলেন সে অনুরোধ জানান তিনি।

মন্ত্রিসভার এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান এবং শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু। এছাড়াও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।