প্রধান বিচারপতির বক্তব্যে আমি স্তম্ভিত: আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক (টিভি থেকে সংগৃহীত)আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘বিদেশ যাওয়ার আগে যখন প্রধান বিচারপতি তার সরকারি বাসভবন ত্যাগ করেন তখন কাউকে অ্যাড্রেস না করে একটি চিঠিতে জানিয়েছেন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ। তার বক্তব্যে আমি স্তম্ভিত।’

রবিবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ছুটিতে যাওয়া সম্পর্কিত দুটি চিঠি পড়ে শোনান আইনমন্ত্রী।

আনিসুল হক বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ছুটিতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে ইস্যু তৈরি করতে চেয়েছে দেশের কিছু কিছু রাজনৈতিক মহল। তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ ছিল। উদ্দেশ হাসিল হয়নি বলেই তাদের এই মায়া কান্না।’
তিনি বলেন, ‘এই দুটি চিঠি পাওয়ার পর আমাদের কোনও সন্দেহের উদ্রেক হয়নি। তাই যে কাজ করা উচিত তাই করেছি। রাষ্ট্রপতিকে চিঠি পৌঁছে দিয়েছি। এরপর রাষ্ট্রপতি বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি করেন। আমার মনে হয় এই নিয়ে বিতর্কের কোনও কারণ ছিল না। কিছু কিছু রাজনৈতিক মহল ইস্যু না থাকায় ইস্যু তৈরির চেষ্টা করছে মাত্র।’

তিনি আরও বলেন, ‘‘সুরেন্দ্র কুমার সিনাহা ১০ অক্টোবর ব্যক্তিগত সহকারীর মাধ্যমে একটি চিঠি পাঠান। সেখানে তার একান্ত সচিব বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করায় মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত। এজন্য তিনি অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ভ্রমণে যেতে চান। এই দুই চিঠি পাওয়ার পর পদক্ষেপ নিয়েছি। জিও করতে হয় তাই করেছি।’
প্রধান বিচারপতির শপথ ভঙ্গ হয়েছে কিনা? শপথ ভঙ্গ হওয়ার পরও তাকে বাইরে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে কিনা? সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে বিষয়টি যাবে কিনা- জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘অভিযোগ উঠেছে, আইন নিজস্ব গতিতে চলবে। অভিযোগ যেহেতু উঠেছে তাই প্রথমে অনুসন্ধান করতে হবে। সত্যতা পাওয়া গেলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে না। আইনে যা বলা হয়েছে সবার জন্য তা প্রযোজ্য হবে।’

সরকার অভিযোগগুলো কবে জানলো- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেসব অভিযোগ তার বিরুদ্ধে দেওয়া হয়েছে সেসবের বিরুদ্ধে কোনও কথা বলব না। তাহলে পক্ষ নেওয়া হবে বলে মনে করি। অভিযোগগুলো সব দুর্নীতি দমন কমিশনের আওতায়। তাহলে বুঝতেই পারছেন কে এটার তদন্ত করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি যে কাজ করতে পারেন, অস্থায়ী প্রধান বিচারপতিও সেই কাজগুলোই করতে পারবেন। অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি চাইলে প্রসাশনিক পারিবর্তনও আনতে পারবেন। ফলে প্রধান বিচারপতি যাওয়ার আগে যে বলে গেছেন উনি কেবল রুটিন ওয়ার্ক করতে পারবেন সেই বক্তব্য আইনসম্মত নয়।’




আরও পড়ুন:

সুপ্রিম জুডিশিয়াল কনসেপ্ট গ্রহণ করিনি, রিভিউ’র প্রস্তুতি নিচ্ছি: অ্যাটর্নি জেনারেল