রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর ৫ দফা বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাপী জনমত গড়ে তুলছে সরকার

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, ফাইল ছবিরোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া ৫ দফা প্রস্তাব বাস্তবায়নে বাংলাদেশ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী জনমত গড়ে তুলতে এ চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী।

বুধবার রোহিঙ্গা ইস্যুতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এই লক্ষ্য অর্জনে জাতিসংঘ মহাসচিব এবং নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে মিয়ানমারের ওপরে চাপ অব্যাহত রাখা অত্যন্ত জরুরি।’

প্রসঙ্গত, গত ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ৫ লাখ ৮২ হাজার রোহিঙ্গা এসেছে। আর আগে থেকেই বাংলাদেশে ৪ লাখ রোহিঙ্গা অবস্থান করছে।  

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ১৩ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা পরিষদে রোহিঙ্গা ইস্যুতে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। এরপর ২৮ সেপ্টেম্বর এ নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনা হয়। আর ১৩ অক্টোবর একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। নিরাপত্তা পরিষদের শেষ বৈঠকে বাংলাদেশ যে বিষয়গুলো তুলে ধরে সেগুলো হচ্ছে, বাংলাদেশের বসবাসরত মিয়ানমারের সব নাগরিকদের প্রত্যাবাসন, ১৯৯২ সালের প্রত্যাবাসন চুক্তির প্রয়োজনীয় সংশোধন ও আন্তর্জাতিক সংস্থার উপস্থিতিতে যৌথ যাচাই-বাছাই এবং কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করা। ওই বৈঠকে তিনটি বিষয়ে প্রাথমিক ঐক্যমত লক্ষ্য করা গেছে বলে মন্ত্রী জানান। এগুলো হলো, ১. মিয়ানমারে অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ করা, ২. মিয়ানমারে নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তা দেওয়া  ৩. মিয়ানমারের নাগরিকদের স্বদেশে ফেরত যাওয়ার ব্যবস্থা করা।

মন্ত্রী বলেন, ‘সভায় বিশেষত চীন ও জাপানের বক্তব্যে আশাব্যঞ্জক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। উভয় দেশই তাদের বক্তব্যে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছে এবং রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান যে মিয়ানমারকে করতে হবে তা উল্লেখ করেছে।’

তিনি জানান, জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের দফতরের তিনটি প্রতিনিধি দল কক্সবাজার সফর করেছে এবং তারা দুটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি বন্ধু রাষ্ট্রসহ সব আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো পরিদর্শনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে।