নজরদারির কারণে পাসের হার কমেছে: প্রধানমন্ত্রী

বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনানজরদারির কারণে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষায় পাসের হার কমেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) বেলা ১২টার দিকে গণভবনে ফলাফলের অনুলিপি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী একথা জানান।

তিনি বলেন, ‘নজরদারির কারণে এবার পাসের হার কম হয়েছে। আশা করি ভবিষ্যতে হার বাড়বে।’ এসময় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নজরদারি বাড়াতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দেন।

স্কুলগুলোয় নজর দিতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঠিকমতো পড়ালেখা হয় কিনা এটা দেখতে হবে। এটা দেখা খুব জরুরি। শিক্ষকদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ হচ্ছে। এই প্রশিক্ষণের ওপর আরও জোর দিতে হবে বলে আমি মনে করি।’

যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষার কারিকুলাম পরিবর্তন, পরিবর্ধনের নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। যুগের প্রয়োজন অনুযায়ী কোন বিষয়, কিভাবে পড়তে হবে তা ঠিক করতে হবে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কারিকুলাম গ্রহণ এবং পরিবর্তন করা প্রয়োজন।’

ফেল করা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করে পাস করার চেষ্টা করতে হবে তোমাদের।’

গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফলের অনুলিপি হস্তান্তর করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। দুপুর ২টায় সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিভাবে ফল প্রকাশ করবেন।

জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ। জেএসসিতে গড় পাসের হার ৮৩.১০ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ৮৪ হাজার ৩৯৭ জন। জেডিসিতে গড় পাসের হার ৮৬. ৮০ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ হাজার ২৩১ জন। জেএসসি ও জেডিসিতে গড় জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৯১ হাজার ৬২৮ শিক্ষার্থী।

এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলের অনুলিপি তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান।

এ সময় তিনি বলেন, 'জীবনের একমাত্র সম্পদ হলো শিক্ষা, যা কেউ কেড়ে নিতে পারে না। লেখাপড়া ছাড়া মানুষের মতো মানুষ হওয়া যায় না, দেশকে ভালোবাসতে হলে লেখাপড়া শিখতে হবে। তাহলেই দেশ এগিয়ে যাবে, সুশিক্ষিত জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে চলবে। তোমাদের ভালো করে লেখাপড়া করতে হবে, নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে। তোমাদের মধ্য থেকেই কেউ ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রী হবে। এক সময় তোমরাই দেশ চালাবে।’

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। তার স্বপ্ন ছিল বাঙালি জাতি শিক্ষাদীক্ষাসহ সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে যাবে, সম্মান নিয়ে বাঁচবে, বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। সেজন্য স্বাধীনতার পরই তিনি প্রাথমিক শিক্ষা অবৈতনিক করেছেন। শিক্ষাকে তিনি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।’

বিএনপির আমলে পাসের হার না বেড়ে কমেছে-এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমরা ১৯৯৬ সালে যখন ক্ষমতা ছেড়ে দেই তখন পাসের হার ছিল ৬৫.৫ শতাংশ। বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর সে হার আরও কমে যায়। ২০০১-২০০৮ সাল পর্যন্ত শিক্ষা অন্ধকারের যুগে ছিল। ২০০৯ সালে এসে দ্রুত শিক্ষার হার বৃদ্ধির উদ্যোগ নেই। বর্তমানের হিসাব অনুযায়ী শিক্ষার হার ৭২ শতাংশ। তবে বাস্তবে আরও বেশি হবে।’ এসময় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার উন্নয়নে বিনামূল্যে বই বিতরণ, উপবৃত্তি প্রদানসহ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।