জেলের বাইরে জেল

কারাগারনিয়মানুযায়ী যেকোনও বন্দিকে কারাগারে রাখা হয়। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে কারাগারের বাইরেও অনেককে বন্দি করে রাখা হয়। কারা আইন অনুযায়ী সরকার প্রয়োজনে কারাগারের বাইরে কোনও বাড়িকে ‘বিশেষ কারাগার’ ঘোষণা দিয়ে বন্দিকে সেখানে রাখতে পারে।

কারাগার সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশে বর্তমানে কোনও ’বিশেষ কারাগার’ বা ‘সাব জেল’ নেই। তবে বিশেষ শ্রেণির বন্দিদের আটক রাখার জন্য প্রয়োজনে কারা আইনের ৩ (১) ধারা অনুযায়ী গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। কারা আইনের সংজ্ঞা অনুযায়ী ‘কারাগার’ অর্থ ‘কোনও জেলখানা বা স্থান, যা স্থায়ী বা সাময়িকভাবে সরকারের সাধারণ বা বিশেষ আদেশে বন্দিদের আটক রাখার জন্য ব্যবহৃত হয় এবং এর অংশ হিসেবে ব্যবহৃত সব জমি এবং স্থাপনাও অন্তর্ভুক্ত হইবে।’

জেল কোডের বিবিধ বিধির ৫৫ ধারায় বলা হয়, ‘একজন বন্দিকে কোনও কারাগার থেকে, যেখানে তাকে আইন সম্মতভাবে আটক রাখা যেতে পারে, বাইরে নেওয়া হয় বা কারাগারের বাইরে বা কারাগারের সীমানার বাইরে ওই কারাগারের কোনও কর্মকর্তা কর্মচারীর আইন সম্মত পাহারায় বা নিয়ন্ত্রণে যখন সে (বন্দি) কর্মরত থাকে, তখন সে কারাগারে রয়েছে বলে গণ্য করতে হবে। সে প্রকৃতপক্ষে কারাগারে থাকলে যেরূপ হতো, সেরূপ সব কিছুর আওতায় থাকবে।’

২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংসদ ভবন এলাকার দু’টি ভবনকে সাব জেল ঘোষণা করেছিল। ওই সাব জেলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে রাখা হয়েছিল। এছাড়া,মিরপুরের একটি বাড়িকে সাব জেল ঘোষণা করে সেখানে জঙ্গি নেতা ‘বাংলা ভাইকে’ কিছুদিন রাখা হয়েছিল বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কারাগারের বাইরে কাউকে রাখতে হলে গেজেটের মাধ্যমে কোনও বাড়ি বা স্থানকে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। সেটা মূল কারাগারের অংশ হিসেবেই বিবেচিত হবে। সরকার চাইলে প্রয়োজনে সেটা করতে পারে।’

কারা অধিদফতরের ঢাকা বিভাগের ডিআইজি (প্রিজন্স) তৌহিদুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সরকার প্রয়োজন মনে করলে কারাগারের বাইরে কোনও বাড়িকে সাব জেল হিসেবে ঘোষণা করতে পারে। গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সেটা হতে হবে। এছাড়া কারাগারের বাইরে কোনও কারা বিধান নেই। যেটাকে সাব জেল হিসেবে ঘোষণা করা হবে, সেটাও মূল কারাগারের অংশ হিসেবেই চিহ্নিত হবে। চলবে কারা আইন ও বিধি অনুযায়ী।