জাতিসংঘ-মিয়ানমারের সমঝোতা চুক্তি পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ

রোহিঙ্গা (ফাইল ছবি: ফোকাস বাংলা)মিয়ানমারে সঙ্গে জাতিসংঘের শরণার্থী ও উন্নয়ন সংস্থার মধ্যে সম্পাদিত সমঝোতা চুক্তি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ। এটি একটি ত্রিপাক্ষিক কাঠামো চুক্তি, যার মাধ্যমে রাখাইনে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা হবে। এর ফলে রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনের সম্ভব হবে। এই প্রসঙ্গে সরকারের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা এখনও বিস্তারিত জানি না। তবে এটি পরিষ্কার—কাঠামো চুক্তি হওয়ার কারণে এর অধীনে আরও কিছু চুক্তি হবে। সহায়ক পরিবেশ তৈরির জন্য কিছু প্রকল্পও হাতে নেওয়া হবে।’

সরকারের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি ও বাংলাদেশের সঙ্গে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার চুক্তির পার্থক্য আছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে শুধু রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো বিষয়টি রয়েছে। কিন্তু মিয়ানমারের ক্ষেত্রে সহায়ক পরিবেশ, নিরাপদ, সম্মানজনক ও স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি জড়িত।’

জানতে চাইলে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। কিন্তু অনেক কিছু এখনও বাকি আছে।’ তিনি বলেন, ‘এটি পরিষ্কার—এই সমস্যা দ্বিপাক্ষিকভাবে সমাধান করা সম্ভব নয়। তাই সঠিকভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত করা হয়েছে।’

সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, ‘‘রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার জন্য মিয়ানমারকে বাধ্য করতে হবে। অন্যথায় তারা একটি ’কসমেটিক’ ব্যবস্থার মাধ্যমে গুটিকয়েক রোহিঙ্গাকে ফেরত নিয়ে সারা বিশ্বকে বলবে সবকিছু ঠিক মতো চলছে।’ রিসেটেলমেন্ট প্ল্যানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি দৃশ্যমান হতে হবে, যেন রোহিঙ্গারা ফিরে যাওয়ার জন্য উৎসাহ বোধ করে। আমি মনে করি যদি নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসন নিশ্চিত হয়, তাহলে সব রোহিঙ্গাই ফেরত যাবে।’

একই ধরনের মত পোষণ করে মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক সামরিক অ্যাটাশে বলেন, ‘নাগরিকত্ব বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’ মুসলিম ও রোহিঙ্গাবিরোধী প্রচারণা বন্ধ না করলে রোহিঙ্গারা ফেরত যেতে উৎসাহ পাবে না বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অবস্থিত এক ক্যাম্প থেকে রাখাইনের অন্য ক্যাম্পে যেতে আগ্রহী হবে না। এ জন্য তাদের ঘরবাড়ি তৈরি করে দিতে হবে এবং তাদের জীবিকার বন্দোবস্ত করতে হবে।’