বাজেট বাস্তবায়ন হলে বিএনপি-জামায়াতের অপরাজনীতি বন্ধ হয়ে যাবে: কাজী নাবিল

সংসদে কাজী নাবিল আহমেদপ্রস্তাবিত বাজেট যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে বিএনপি-জামায়াতের অপরাজনীতি চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন সরকারি দলের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘জনবিচ্ছিন্ন বিএনপি-জামায়াত জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে। ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তাদের চক্রান্ত নস্যাৎ করে দেশকে এগিয়ে নেওয়া হবে।’

রবিবার (২৪ জুন) জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সবক্ষেত্রে অভাবনীয় উন্নতি হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘নারীর ক্ষমতায়ন, নারী ও শিশুর উন্নয়ন, সামাজিক খাতের ব্যাপক অগ্রগতি, অবকাঠামো খাতে অভাবনীয় উন্নতি ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিস্ময়কর উন্নতির মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আর্বিভূত হয়েছে। বিশাল কর্মযজ্ঞে সফল নেতৃত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব দরবারে শীর্ষস্থানে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে মাদার অব হিউম্যানিটিতে ভূষিত হয়েছেন। সফল কর্মকাণ্ড বিশ্বের কাছে তাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। তার স্বীকৃতি ও সম্মাননা দেশকে সম্মানিত করেছে। দেশের ভাবমূর্তিকে সমুজ্জ্বল করেছে। গত এক দশক সরকারের ধারাবাহিকতায় সবক্ষেত্রে অভাবনীয় উন্নতি হয়েছে। মাথাপিছু আয়, রফতানি আয় বৃদ্ধি ও রিজার্ভ বেড়েছে। দেশের ৯০ শতাংশ এলাকা বিদ্যুতের আওতায় এসেছে।’

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এতিমের টাকা মেরে খালেদা জিয়া কারাগারে। দুর্নীতিসহ একাধিক মামলায় তার ছেলে লন্ডনে পলাতক। বিএনপি নেতারা লন্ডনে বসে ষড়যন্ত্র করছে বলে বিশ্ব মিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়। কানাডার আদালত বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।’

বর্তমান সরকারের আমলে নিজের নির্বাচনি এলাকার উন্নয়নের বর্ণনা তুলে ধরেন যশোর সদর আসনের এই এমপি। যশোর জেলার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ নজর দেওয়ায় তিনি তাকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘বহু কাঙ্ক্ষিত ভৈরব নদ খনন, শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, মেডিক্যাল কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়তন দ্বিগুণ করে একাধিক একাডেমিক ভবন তৈরি, বিমানবন্দর ও স্টেডিয়ামের আধুনিকায়ন, সুরম্য আদালত ভবন তৈরি, এমএম কলেজে দুটি সুবিশাল হোস্টেল তৈরি, শহরের রাস্তাঘাট প্রশস্তকরণসহ ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নতি, গ্রামীণ অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎসহ স্কুল-কলেজের উন্নয়নে অসংখ্য ভবন নির্মাণ ও সংস্কারের মাধ্যমে যশোরবাসীর জীবনমানের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এখনও যশোরে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলছে।’

সড়ক ও সেতুমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘বর্ষাকাল শুরু হয়েছে। সামনে জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচনের আগে সড়ক-মহাসড়ক যাতে নষ্ট হতে না পারে সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন।’

বাজেট আলোচনায় তিনি খুলনা-যশোর-কলকাতা রেলপথে যশোর শহরে স্পটেজ, শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত কমিউটার ট্রেন চালু, কৃষিপণ্যের কথা বিবেচনা করে একাধিক কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণ, একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও পাঁচ তারকা মানের হোটেল নির্মাণের দাবি জানান।

বাজেটকে জনমুখী আখ্যায়িত করে কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ‘এই বাজেট পেশের পর দেশে কোনও অস্থিরতা সৃষ্টি হয়নি। জিনিসপত্রের দাম বাড়েনি। কঠোর সমালোচকেরাও সুনির্দিষ্ট কোনও ত্রুটি বের করতে পারেননি। সরকারের অন্য বাজেটগুলোর মতো এবারের বাজেটও সফলভাবে বাস্তবায়িত হবে।’

সরকার মাদক ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যে লড়াই শুরু করেছে তা সবমহলে প্রশংসিত হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের অর্থনীতি সুদৃঢ় অবস্থানে পৌঁছেছে। জাতি হিসেবে আমরা সমৃদ্ধির সোপানে পদার্পণ করেছি। এই বাজেট বাস্তবায়নে দেশের জনগণ তাদের উদ্যোগ, সৃজনশীলতা, কর্মদক্ষতা ও অংশীদারিত্বের মাধ্যমে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করবে। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন ও অংশগ্রহণে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাবে আগামীর পথে।’