সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরলেন আরও ৪২ নারী শ্রমিক

ফেরত আসা এক নারী শ্রমিক। ফাইল ছবিসৌদি আরব থেকে দেশে ফিরলেন আরও ৪২ নারী শ্রমিক। সোমবার (৯ জুলাই) রাত ৯টা ৫০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি ০৪০ ফ্লাইটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তারা অবতরণ করেন। ফ্লাইটটি বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটে এসে পৌঁছানোর কথা থাকলেও পৌঁছাতে বিলম্ব হয়।

জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) জনশক্তি জরিপ কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান আনসারী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এই ফ্লাইটে ৪২ জন নারী শ্রমিক এসেছেন। এদের কারও কারও পাসপোর্ট ছিল না। তাদের আউটপাস দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সার্বিক সহযোগিতা করেছি।

১৫ মাস সৌদিতে কাজ করে এই ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন পারু বেগম। তিনি সঙ্গে করে পাসপোর্ট এবং জনশক্তি কার্ডসহ আনুষঙ্গিক কিছুই নিয়ে আসতে পারেননি।  পারু বেগম বলেন, ‘কফিলের (নিয়োগকর্তা) বাড়ি থেকে পালিয়ে দূতাবাসে আশ্রয় নেই। সেখানে এক সপ্তাহ ছিলাম। এরপর দেশে ফেরার আগে দুই সপ্তাহ সফর জেলে (ডিপোর্ট সেন্টার) ছিলাম। মালিক আমার তিন মাসের বেতন দেয় নাই। বেতন চাওয়ায় আমার ডান হাত ভাইঙা দিছে।’

দারিদ্র্য বিমোচন এবং কর্মক্ষেত্রের স্বল্পতার কারণে সৌদি আরবে পাড়ি দেন ভাগ্যবিড়ম্বিত এসব নারীরা। ভাগ্য পরিবর্তনে পাড়ি জমান সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ওমান, কাতার, বাহরাইন, লেবাননসহ ১৮টি দেশে। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) দেওয়া তথ্যমতে, ২০১৭ সালে এমন অভিবাসী নারীর সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ১৯ হাজার ৯২৫ জন, যা মোট অভিবাসন সংখ্যার ১৩ শতাংশ।

১৯৯১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত একা অভিবাসনপ্রত্যাশী নারী শ্রমিককে অভিবাসনে বাধা দেওয়া হলেও পরে ২০০৩ এবং ২০০৬ সালে বিষয়টি কিছুটা শিথিল করা হয়। ২০০৪ সালের পর থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত নারী শ্রমিকের অভিবাসন হার ক্রমাগত বাড়তে থাকে। ২০১৫ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় মোট অভিবাসনের ১৯ শতাংশে। যদিও এই হার অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নারী শ্রমিক যায় সৌদি আরবে। আবার নানা কারণে নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার আগে সেখান থেকেই সবচেয়ে বেশি নারী ফেরত আসেন। তবে কোনও সংস্থা কিংবা মন্ত্রণালয়, কারও কাছে এই ফেরত আসা শ্রমিকের বিষয়ে সঠিক কোনও তথ্য নেই।

বিমানবন্দরের প্রবাস কল্যাণ ডেস্ক থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ৩ মে ৩৫ জন, ১২ মে ২৭ জন, ১৯ মে ৬৬ জন, ২৩ মে ২১ জন, ২৭ মে ৪০ জন এবং ৩ জুন ২৯ জন নারী শ্রমিক দেশে ফিরেছেন। এছাড়া ১৮ জুন ১৬ জন এবং ১৯ জুন ২৭ জন এবং ২৬ জুন ২২ জন নারী শ্রমিক দেশে ফিরেছেন।