সকলেরই স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার অধিকার আছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি-ফোকাস বাংলা)জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এক হয়েছে। রাজনীতিতে সকলেরই স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার অধিকার আছে। এটাকে আমরা স্বাগত জানাই।’

সৌদি আরব সফরের বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সোমবার (২২ অক্টোবর) বিকাল ৪টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী তার সাম্প্রতিক সৌদি আরব সফরের বিস্তারিত তুলে ধরার পাশাপাশি সমসাময়িক রাজনৈতিক ইস্যুতে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্বাধীনতা আছে, কথা বলার স্বাধীনতা আছে, সাংবাদিকতার স্বাধীনতা আছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও এক হয়েছে, সেটাকে আমরা স্বাগত জানাই।

তিনি বলেন,তারা যদি ঐক্যবদ্ধ হতে পারে আর রাজনৈতিকভাবে সাফল্য পায় তাতে অসুবিধা কিসের? তবে একটু লক্ষ্য রাখা দরকার, কারা কারা এক হলো। সেটাও আপনারা দেখবেন, কে কোন ধরনের, কে কোন চরিত্রের, কার কী ধরনের ভূমিকা, কী ধরনের বাচনিক ভঙ্গি, মেয়েদের প্রতি কে কী ধরনের কটূক্তি করতে পারে সে প্রতিযোগিতাও আপনারা দেখেছেন। এ গাছের ছাল, ও গাছের বাকল সবমিলিয়ে যে একটা তৈরি হয়েছে…যাক তারা ভালো কাজ করুক সেটাই চাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা) সেখানে যুক্ত হয়েছেন, তারা কেমন, মেয়েদের প্রতি কেমন মনোভাব তাদের, সেটাও সবাই দেখেছেন। এখানে স্বাধীনতাবিরোধী, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়নরাও রয়েছে। সবাই মিলে এক জায়গায় হয়েছে। এটাকে বাংলাদেশের মানুষ কীভাবে দেখেন সেটাই বিষয়।

তিনি বলেন, আমার আওয়ামী লীগ এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করে না। মনে করি এটাই ভালো। কারণ, এখানে স্বাধীনতাবিরোধী আছে, এখানে জাতির পিতার হত্যাকারী ও ইনমেনিটি দিয়ে যাদের পুরস্কৃত করেছিল তারা, জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে যারা, বাংলাদেশকে পাঁচ পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছে যারা এরকম সব ধরনের মিলে এক জায়গায় হয়েছে। এটাকে বাংলাদেশের মানুষ কীভাবে দেখে সেটাই বড় কথা। 

ব্যারিস্টার মইনুলকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, জোটের এমনও সদস্য রয়েছেন যিনি এক নারী সাংবাদিককে যে ধরনের নোংরা কথা বলছেন। তারা সব এক। এ রকম একটা জোট হওয়ায় আমার কোনও খারাপ কিছু দেখছি না। তারা রাজনৈতিকভাবে জনগণের কাছে যদি বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারে করুক।

তিনি বলেন, ‘এদের অনেকে আওয়ামী লীগে ছিল একসময়। আওয়ামী লীগ থেকে দূরে গিয়ে এখন তারা জোট করেছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। দেশে সকলেরই স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার সুযোগ রয়েছে। এই সুযোগে যারা জোট গঠন করেছেন, আমি তো সাধুবাদ জানাই যে তারা ভালো করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশে তার প্রতিটি রাষ্ট্রীয় সফর শেষে সফরের বিস্তারিত কর্মকাণ্ড সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জনগণকে জানান। সর্বশেষ ১৬-২০ অক্টোবর তিনি সৌদি আরব সফর করেন। সফরকালে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। এছাড়া তিনি সৌদি বাদশাহ ও যুবরাজের সঙ্গেও বৈঠক করেন। পাশাপাশি তিনি সৌদি রাজধানী রিয়াদের কূটনৈতিক এলাকায় বাংলাদেশ চ্যান্সারি ভবন উদ্বোধন এবং জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী এবারের সৌদি আরব সফরে মদিনায় মসজিদে নববীতে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রওজা জিয়ারত এবং মক্কায় পবিত্র ওমরাহ পালন করেন।