কঠোর হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনএকাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেকোনও মূল্যে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায় সরকার। এ লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এই উদ্দেশ্যে সরকার বেশকিছু কৌশল নিচ্ছে। প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক—এই দু’ভাবেই আগামী দিনগুলোর যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলোকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। 

সূত্র জানায়, নির্বাচনের সময় দেশে, যেকোনও প্রান্তের নাশকতা ঠেকাতে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থার পাশাপাশি মাঠপর্যায়ের গ্রামপুলিশ, দফাদার থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধি ও দলের নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ত করা হতে পারে। দেশের সব জেলা-উপজেলায় বিশেষ করে প্রতিটি সংসদীয় আসনে সন্ত্রাস-নাশকতা প্রতিরোধ কমিটিকে সক্রিয় করার কথাও ভাবা হচ্ছে। একইসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত বিশেষ বার্তাগুলোর প্রতিও বিশেষ নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।

এ লক্ষ্যে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) এসব নির্দেশনা দিয়ে জরুরি বার্তা পাঠানো হতে পারে। নির্বাচন কমিশনের পরামর্শে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ উদ্যোগ নিচ্ছে। এ উদ্যোগ কার্যকর করতে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার প্রধানের সঙ্গে সম্প্রতি বৈঠকও করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।  

সূত্র জানায়, নির্বাচনি প্রচারণা শুরুর সঙ্গে-সঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বিগ্ন সরকার। যাদের ইঙ্গিতে ও মদদে হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটবে। এর মাধ্যমে ফায়দা লোটার চেষ্টা করবে, তাদের প্রতি কঠোর হওয়ার জন্য সরকারের শীর্ষ মহল থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই দেশের যে সব এলাকায় এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে, সেখানে স্থানীয় জনসাধারণের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। আগামী ২/১ দিনের মধ্যেই সেখানে অ্যাকশনে যাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।  নির্বাচন কমিশন থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যে সব নির্দেশনা পাঠিয়েছে, তার মধ্যে এটি একটি উল্লেখযোগ্য নির্দেশনা। 

জানা গেছে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে মোটরসাইকেল-চালক ও আরোহীদের প্রতি কঠোর হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নজরদারিতে থাকবে এই বাহনটির চালক ও আরোহী। নজরদারি থাকবে বিকাশসহ মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রমের ওপরও। বিকাশ হিসাবের মাধ্যমে নির্বাচনে টাকা লেনদেন হচ্ছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সহযোগিতা চাইবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। 

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেকোনও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত।’ 

ভোটকেন্দ্রে বড় ধরনের কোনও নাশতকা বা হামলার আশঙ্কা সম্পর্কে স্বরাষ্টমন্ত্রী বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছেন।’ তারা যেকোনও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত বলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ আমাদের সঙ্গে রয়েছে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে রয়েছে। দেশের নিরাপত্তা বাহিনী অত্যন্ত দক্ষ। তারা যেকোনও হামলা ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত।’ এসব হামলার ঘটনায় যারাই দায়ী, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও তিনি জানান।