সম্পর্কোন্নয়নে তিন দিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন পররাষ্ট্র সচিব

পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক
আওয়ামী লীগ সরকার নতুন মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর বিদ্যমান সম্পর্ক আরও পোক্ত করার উদ্দেশ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক। এজন্য আগামী ২২ জানুয়ারি তিন দিনের সফরে ওয়াশিংটন যাচ্ছেন তিনি। তার এ সফরে হোয়াইট হাউস, স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও পেন্টাগন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, পররাষ্ট্র সচিব এসময় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক, বাণিজ্য, জ্বালানি, শ্রমাধিকার, সন্ত্রাসবাদ, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, রোহিঙ্গা এবং ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি নিয়ে আলোচনা করবেন। এছাড়াও বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কেও যুক্তরাষ্ট্রকে অবহিত করবেন তিনি।
রাজনৈতিক সম্পর্ক
আসন্ন সফরে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি ডেভিড হ্যালের সঙ্গে শহীদুল হকের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বৈঠকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে হ্যালকে অবহিত করবেন তিনি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সম্প্রতি বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং বন্ধু-রাষ্ট্র হিসাবে তাদের এ বিষয়ে আগ্রহ থাকতেই পারে।
যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন প্রতিক্রিয়া দিয়েছে এবং এ বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করতে পারি।’
মানবাধিকারসহ সকল ইস্যুতে দেশটির সঙ্গে আমরা আলোচনা করতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
বাণিজ্য
গত অর্থ বছরে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৬.৬৮ বিলিয়ন ডলার। এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি ছিল প্রায় পাঁচ বিলিয়ন ডলার যা ওই দেশটির মোট আমদানির ০.২৩ শতাংশ। কিন্তু, এজন্য যে পরিমাণ শুল্ক দিতে হয় সেটি যুক্তরাষ্ট্রের মোট আমদানি শুল্কের ২.৫৪ শতাংশ।
একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এটি অসম এবং আমরা তাদেরকে শুল্ক কমানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছি।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, মার্কিন কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ করুক এটি আমরা চাই এবং তারা চাইলে বিশেষ অর্থনৈতিক জোন বা শুধুমাত্র মার্কিন কোম্পানির জন্য বিশেষ জোন করে দেওয়া হবে। সেখানে তারা বিনিয়োগ করতে পারে।
তিনি বলেন, জাপান, ভারত, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানির জন্য শুধুমাত্র জোন আছে এবং এধরনের ব্যবস্থা মার্কিন কোম্পানিগুলির জন্যও করা যেতে পারে।
জ্বালানি
জ্বালানি খাতে যুক্তরাষ্ট্রের বড় বিনিয়োগ আছে বাংলাদেশে। শুধুমাত্র শেভরন কোম্পানি বাংলাদেশে ৩ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আছে এবং তারা এখান থেকে ৫.৮ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে।
আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ৪০টি ব্লক আছে এবং এখানে আমরা মার্কিন কোম্পানির আরও বিনিয়োগ চাই।
এখানে এর আগে সিমিটার, অক্সিডেন্টাল ও কনোকোফিলিপস কাজ করেছে এবং এ ধরনের আরও কোম্পানি বিনিয়োগ নিয়ে বাংলাদেশে আসতে পারে।
অন্যান্য ইস্যু
রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো  ও সন্ত্রাসবাদবিরোধী কার্যক্রম নিয়ে দুইদেশের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার এবং এটিকে কিভাবে আরও গতিশীল করা যায় সেটি নিয়ে দুইপক্ষ আসন্ন বৈঠকে আলোচনা করবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের অবহিত করেছে। এর মূল ভিশন নিয়ে বাংলাদেশের কোনও দ্বিমত নেই।