সংসদে বিল: ২০ শতাংশ সমর্থন হলেই ইপিজেড শ্রমিক কল্যাণ সমিতি

জাতীয় সংসদ (ছবি: সাজ্জাদ হোসেন)

রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড)-এর কারখানাগুলোতে ট্রেড ইউনিয়নের আদলে ‘শ্রমিক কল্যাণ সমিতি’ গঠনের ক্ষেত্রে শ্রমিকদের সমর্থনের হার শিথিল করতে সংসদে ‘বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম বিল-২০১৯’ উত্থাপন করা হয়েছে। এতে শ্রমিকদের সমর্থনের হার ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন। এরপর বিলটি ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে বিলটিতে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। পরে এটি অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়। সেই অধ্যাদেশটি আইন করতে সংসদে তোলা হয়েছে বিলটি।

প্রস্তাবিত আইনে শ্রমিকদের ধর্মঘট করার ক্ষেত্রে দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থনের বিধান রাখা হয়েছে। আগের আইনে সেটা তিন-চতুর্থাংশ ছিল।  

জানা যায়, শ্রমিক নিয়োগ, মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক, সর্বনিম্ন মজুরি হার নির্ধারণ, মজুরি পরিশোধ, দুর্ঘটনাজনিত কারণে শ্রমিকের জখমের জন্য ক্ষতিপূরণ, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিধান করতে আইনটি প্রণয়ন করা হচ্ছে।

শ্রম আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শ্রমিক কল্যাণ সমিতির গঠনতন্ত্র শ্রমিকরা নিজেরা করতে পারবেন,সেই বিধানও রাখা হয়েছে।

বিলে বলা হয়েছে, অবসর গ্রহণের ক্ষেত্রে শ্রমিকরা প্রত্যেক বছরের জন্য ৪৫ দিনের মূল মজুরি পাবেন।

প্রস্তাবিত আইনে মালিক সমিতি গঠন করার বিধান রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে, কোনও জোনে অবস্থিত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর সংখ্যাগরিষ্ঠ মালিকরা সম্মত হয়ে মালিক সমিতি গঠন করতে পারবেন।  

বলা হয়, কোনও ব্যক্তি এই আইনের অধীনে দাখিল করা কোনও আবেদনপত্র বা অন্য কোনও দলিলে মিথ্য বিবৃতি দিলে জেল জরিমানার সম্মুখীন হবেন। ওই ব্যক্তি মালিক হলে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ৩ মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ড পাবেন। আর শ্রমিক হলে ৫০ হাজার অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ৩ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

বিলে আরও  বলা হয়েছে, কোনও শ্রমিক আইন না মেনে ধর্মঘট বা লক-আউট করলে ৫ হাজার টাকা জরিমানা অথবা ছয় মাসের কারাদণ্ড পাবেন।

 প্রস্তাবিত আইনে ইপিজেড এলাকায় ১১ সদস্যের মজুরি বোর্ড গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। বোর্ডের চেয়ারম্যান সরকার নিযুক্ত হবেন।

বোর্ডে ইপিজেড কর্তৃপক্ষ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্তৃপক্ষ, অর্থ বিভাগের প্রতিনিধি, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, মালিক-শ্রমিক প্রতিনিধি রাখা হয়েছে। তবে বোর্ডে মালিক বা শ্রমিক পক্ষ প্রতিনিধি না দিলে বোর্ড নিজ বিবেচনায় প্রতিনিধি মনোনীত করবে।