পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবি

IMG_20190517_111402পাটকল শ্রমিকদের ১০ সপ্তাহের বকেয়া মজুরি পরিশোধ ও ঘোষিত মজুরি অবিলম্বে কার্যকরের দাবি জানিয়েছে শ্রমিক কর্মচারি ঐক্য পরিষদ-স্কপ। শুক্রবার ১৭ মে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।

সমাবেশে স্কপ নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সচিবালয়ের কোনও কর্মকর্তার কিংবা পুলিশ বা সামরিক বাহিনী'র কোনও সদস্যের বেতন বকেয়া আছে কি? তাহলে একই দেশে রাষ্ট্রায়ত্ব সরকারি পাটগুলোর শ্রমিকদের বেতন ও মজুরি বকেয়া থাকবে কেন? সরকারি কর্মকর্তারা ২০১৫ সাল থেকে পে-কমিশন অনুয়ায়ী বেতন পেলেও সরকারি পাটকলের শ্রমিকেরা এখনও তাদের ঘোষিত মজুরি কমিশন অনুযায়ী মজুরি পাচ্ছে না।

বক্তারা বলেন, ২০১৫ সাল থেকে মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন হওয়ার কথা থাকলেও এক দেশে দুই নীতি থাকার ফলে শ্রমিকরা মজুরি থেকে বঞ্চিত, শোষিত ও নির্যাতিত হচ্ছে। শ্রমিকরা বিভিন্ন পাটজাত দ্রব্য উৎপাদন করছে। তার বিনিময়ে তারা মজুরি দাবি করছে।

স্কপ নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারি পাটকল কেন অলাভজনক তার কোন সঠিক রিপোর্ট আজ পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি। কিন্তু ঢালাওভাবে শ্রমিকদের উপর দায় চাপিয়ে আদমজীসহ বেশিরভাগ পাটকল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যেগুলো বর্তমানে চালু আছে সেগুলোকেও বেসরকারি খাতে মুষ্টিমেয় মুনাফালোভী গোষ্ঠীর হাতে ছেড়ে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। এ চক্রান্তের অংশ হিসেবেই শ্রমিকদের মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। তাদের বকেয়া বেতন দেওয়া হচ্ছে না।

বক্তারা বলেন, শুধু খুলনা অঞ্চলের নয়টি পাটকলের শ্রমিকদের ১২ সপ্তাহের মজুরি ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের ৩-৪ মাসের বকেয়া বেতন বাবদ পাওনা ৭৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা। কিন্তু ওই নয়টি পাটকলে ৩২৫ কোটি টাকার পাটপণ্য মজুত আছে। নয়টি পাটকলের প্রতিদিনের উৎপাদন ক্ষমতা ২৭২ টন। কিন্তু সেখানে প্রতিদিন উৎপাদন করা হচ্ছে ১০০.২৯ টন। এখানে প্রতিদিন যে ১৭২ টন কম উৎপাদন হচ্ছে এবং এতে করে রাষ্ট্রের যে ক্ষতি হচ্ছে তার দায় দায়িত্ব কার। মৌসুমে ১২০০/১৫০০ টাকা মণ দরের পাট সময়মতো না কিনে পরে ২৫০০/৩০০০ টাকা দিয়ে ব্যবসায়ী ও ফড়িয়াদের কাছ থেকে কেনার ফলে যে ক্ষতি হয় তার দায়িত্ব কেন শ্রমিকেরা নেবে? অর্থ মন্ত্রণালয় কেন সময় মতো অর্থ ছাড় করে না। এ সবই শাসক লুটেরাদের চক্রান্ত।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল জাতীয় প্রেসক্লাব, তোপখানা রোড হয়ে পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সমাবেশে পাটকল শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ নেতা শহীদুল্লাহ চৌধুরী, মেজবাহউদ্দিন আহমেদ, আনোয়ার হোসেন, সাইফুজ্জামান বাদশা, হাবিবউল্লাহ, কামরুল আহসান, ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম, রাজেকুজ্জামান রতন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।