আইবিবিএফের প্ল্যাটফর্মের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও আপনাদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সুনিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্ল্যাটফর্মটি রয়েছে। আমরা আপনাদের প্রচেষ্টা সহজ করার জন্য সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত।’
ভারতের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কগুলোয় বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বেশ কয়েকটি হাইটেক পার্ক প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী উদ্যোগের জন্যও প্রস্তুত রয়েছে। মোংলা, ভেড়ামারা ও মিরেরসরাইয়ে ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য তিনটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রস্তুত করা হয়েছে। এই তিনটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের পর্যাপ্ত বিনিয়োগ আমাদের রফতানিযোগ্য খাতকে আরও প্রশস্ত করতে সহায়তা করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছি, যারমধ্যে প্রায় ১২টি তৈরি হয়ে গেছে। সেখানে ৪টি অঞ্চল ৩টি দেশের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’
এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে বাংলাদেশের গড়ে ওঠা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থান দেশটিকে এই অঞ্চলের অর্থনীতির কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে ব্যাপক সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। পশ্চিমে ভারত, উত্তর দিকে চীন ও পূর্বদিকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া।’
বৈশ্বিক সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) প্রবৃদ্ধির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ সালে আমাদের সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে বৈশ্বিক এফডিআই’র ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে প্রতি ক্রমবর্ধমান আস্থারই প্রতিফলন।’
সন্ত্রাস ও দুর্নীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ১৬ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যা সমন্বিত একটি প্রগতিশীল ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র।’
দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। বাণিজ্যের ভারসাম্য যদিও এখন পর্যন্ত ভারতের পক্ষে রয়েছে।’
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যতে বাংলাদেশে পেঁয়াজসহ যেকোনও পণ্যের রফতানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত আগে থেকে জানানোর অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে আপনারা বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দিয়েছেন। আগে নোটিশ দিলে আমরা অন্য দেশ থেকে ব্যবস্থা করতে পারতাম। ভবিষ্যতে এমন কিছু করলে আগে জানালে ভালো হয়।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী, ভারতের শিল্প ও রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল, বাংলাদেশের ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)-এর সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, ভারতের কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই)-এর সভাপতি বিক্রম শ্রীকান্ত কিরলসকার, ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই)-এর সভাপতি সন্দীপ সোমনি, অ্যাসোসিয়েটেড চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অব ইন্ডিয়া (এএসএসওসিএইচএএম)-এর সভাপতি বালকৃষ্ণ গোয়েঙ্কা। সূত্র: বাসস