গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিয়ে আসা সংক্রমণের শঙ্কা বাড়িয়ে দেয়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকগার্মেন্টস শ্রমিকদের ঢাকায় নিয়ে আসা কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের শঙ্কাকে বাড়িয়ে দেয় বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি হবে না, হলে পরে সংক্রমণ অবশ্যই বেড়ে যাবে।’ বিকেএমইএ  এবং বিজিএমইএ’র এই সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি বলে জানান তিনি।

রবিবার (৫ এপ্রিল) কোভিড-১৯ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী এ কথা বলেন। যে ঝুঁকি তৈরি হলো এবং এই দুই সংগঠন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে না জানিয়ে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিলো কিনা প্রশ্নে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে নয়। কাজেই তারা আমাদের কাছে জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন মনে করেনি। কিন্তু এই বিষয়টি সঠিক হয়নি— এটা আমরা মনে করি।’

কিন্তু বাংলাদেশে বর্তমানে সংক্রামক ব্যাধি আইন কার্যকর রয়েছে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন জানতে চাইলে জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা যখনই জানতে পেরেছি, তখনই বিভিন্ন জায়গায় জানানো হয়েছে।’ 

যারা এ সময়ে ত্রাণ দিচ্ছেন, তারা ত্রাণ দেওয়া বজায় রাখবেন, তবে সেটা তাদের বাড়িতে পৌঁছিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী  বলেন, ‘তাহলে তাদের বেরিয়ে আসতে হবে না, জড়ো হতে হবে না এবং সংক্রমিত হবে না।’

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঘর থেকে বেরোবেন না। অতি প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া ঘর থেকে বের হবেন না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবেন। ঘরেই নামাজ আদায় করবেন। বাইরে যাওয়ার দরকার হলে মাস্ক পরে যেতে হবে।’ করোনা পরিস্থিতি আগের চেয়ে বেড়েছে মন্তব্য করে মন্ত্রী সবাইকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন।

বয়স্ক এবং অসুস্থদের নিরাপদে রাখতে হবে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘তাদের ঝুঁকিটা বেশি।’

সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সরা সার্বক্ষণিকভাবে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন,  ‘কারও যদি করোনা সংক্রমণ হয়,  তাহলে কোভিড-১৯ এর ডেডিকেটেড হাসপাতালে চলে যাবেন, সেখানে চিকিৎসা হবে।’

টেস্টিং কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা উপজেলা এবং জেলা পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাচ্ছি। এর ফলে পরীক্ষা ব্যবস্থা বেড়ে যাচ্ছে। আগামীতে এক থেকে দেড় হাজারের বেশি (পরীক্ষা) নিয়ে যেতে চাচ্ছি।’ চীন, কোরিয়া সিঙ্গাপুরের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ কে তারা কন্ট্রোল করেছে টেস্টিং-আইসোলেশন, সামাজিক দূরত্ব এবং মুখে মাস্কের মাধ্যমে। আমাদরকে সেখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে। আমরা চাই না এটা বেড়ে যাক এবং আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাক। সেটা হলে ইউরোপ-আমেররিকার মতো হয়ে যাবে।’

বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক এবং প্রাইভেট প্র্যাকটিশনার চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি আবারও অনুরোধ করবো, এই দুঃসময়ে কেউ দূরে থাকবেন না।’ কোনও সহযোগিতার দরকার হলে মন্ত্রণালয় তাদেরকে সাহায্য করবে বলেও জানান তিনি। দূরে থাকলে দেশবাসীর প্রতি অন্যায়  এবং অবিচার করা হবে বলেও মন্তব্য করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।