ব্যাংক থেকে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা ঋণ নেবে সরকার

বাজেটে টাকা আসবে যেভাবে২০২০-২১ অর্থবছরে সরকার ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নেবে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার(১১ জুন) জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ তথ্য জানান। ২০২০-২১ অর্থবছরের ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, বাজেটে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে সরকার ঋণ হিসেবে ১ লাখ ৯ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। এরমধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে সরকার ঋণ নেবে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা।

জানা গেছে, ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার ৬ থেকে ৮ শতাংশ সুদে ঋণ পাচ্ছে। আর সঞ্চয়পত্রে সুদ গুনতে হয় ১১ শতাংশের বেশি। এ কারণে অভ্যন্তরীণ উৎসে এখন ব্যাংক খাতের ওপর সরকারের ঋণ নির্ভরতা ব্যাপক বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে চলতি অর্থবছরের পুরো সময়ে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ৭২ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা করা হয়েছে। গত ৩১ মে পর্যন্ত সরকার নিট ৬৪ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা নিয়েছে। গত অর্থবছরের তুলনায় যা ৩৭ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি।
রাজস্ব ঘাটতির চাপ থেকে পরিত্রাণ পেতে সরকার বাধ্য হয়েই ব্যাংক ঋণনির্ভর হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, এমনিতেই রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি ভালো ছিল না। এর সঙ্গে করোনা এসে আরও সংকট বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে বাধ্য হয়েই সরকার ব্যাংকনির্ভর হয়ে পড়েছে।
অবশ্য এ পরিস্থিতিতে নিরাপদ বিনিয়োগ মনে করে সরকারকে ঋণ দিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন ব্যাংকাররা। এ প্রসঙ্গে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি)-এর সাবেক চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে সরকারকে ঋণ দেওয়াই সবচেয়ে বেশি নিরাপদ। এছাড়া এখন সরকারেরও ঋণ দরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের শুধু মে মাসেই সরকার ব্যাংক খাত থেকে ৬ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। আর চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে গত ৩১ মে পর্যন্ত ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের নিট ঋণ দাঁড়িয়েছে ৬৪ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা।