কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে সৎ করদাতাদের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে

সিপিডি২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে সৎ করদাতাদের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর শুক্রবার (১২ জুন) ভার্চুয়াল সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ফাহমিদা খাতুন বলেন,  ‘প্রতিবছর কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয় একটা ডিসকাউন্ট রেটে। ১০ শতাংশ কর দিয়েই কালো টাকা সাদা করা যায়। করোনা পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে কালো টাকা কীভাবে সিস্টেমের মধ্যে আনা যায় সেজন্য আরও কিছু খাতে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দিয়ে এ কাজে উৎসাহিত করা হয়েছে। কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিলে সৎ করতাদাতের প্রতি অন্যায় করা হয়। তাদের প্রতি সুবিবেচিত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘যারা সৎ করদাতা তারা প্রচলিত হারে কর দিয়ে আসছেন। অথচ যারা বছরের পর বছর কর ফাঁকি দিচ্ছেন, তারা এই সুযোগে শুধু ১০ শতাংশ কর দিয়ে টাকাটা সাদা করে ফেলতে পারছেন।’
ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘এই ধরনের সুবিধা দিলে কোনও লাভ হয় না। স্বাধীনতার পর প্রায় প্রতিবছর কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেখান থেকে কোনও লাভ হয়নি। এ পর্যন্ত প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকার মতো এসেছে। যেটা খুবই নগণ্য। এর মধ্যে ২০০৭ ও ২০০৮ সালে তত্ত্বাধায়ক সরকারের আমলে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকার ওপরে এসেছে।’
কালো টাকার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঘোষণা দেওয়ার পরও যদি যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়া হয় এবং একটি ম্যাসিভ ড্রাইভ না দেওয়া হয়, তাহলে ঘোষণা দেওয়ার পরও কেউ কালো টাকা সাদা করবে না। কারণ এটা সহজাত বিষয়। তারা যদি এতদিন কর ফাঁকি দিয়ে আসতে পারে, তাহলে কেন আবার ঘোষণা দিয়ে কর জালের মধ্যে আসবে? এটার জন্য আসলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’
সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, সিপিডির গবেষক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বক্তব্য রাখেন।
অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান  বলেন, ‘আমরা যে স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখছি, তা থেকে এত দ্রুত আমরা প্রস্থান পাবো না। স্বাস্থ্য খাতে দেখেছি, সামাজিক খাতে দেখেছি, আমরা এটা একটা মানবিক ঝুঁকি হিসেবে দেখছি। কিন্তু যেভাবে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তাতে যেন কিছু দিনের মধ্যেই সব ঠিক হয়ে যাবে। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।’

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী।