শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলে ধর্ষণ কমবে: আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক (ছবি: নাসিরুল ইসলাম)
ধর্ষণের সাজা যাবজ্জীবন থেকে বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড করা হলে এ ধরনের অপরাধের সংখ্যা কমে আসবে বলে মনে করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সোমবার (১২ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

আনিসুল হক বলেন, ‘আমরা নিশ্চয়ই বিশ্বাস করি, ধর্ষণের সাজা যাবজ্জীবন থেকে মৃত্যুদণ্ড করায় এই অপরাধ কমে আসবে। না হলে বাড়ানোর প্রশ্নটাই আনতাম না। গত বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমি আপনাদের বলেছিলাম, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ এর (১) ধারায় ধর্ষণের জন্য যে সাজা আছে, সে সাজা ছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, সেই ধারা সংশোধন করে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করা হোক। সে মোতাবেক আজ এই আইনের ৯(১) ধারায় ধর্ষণের সাজা যাবজ্জীবনের পরিবর্তে মৃত্যুদণ্ড করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমি একটি সংশোধন প্রস্তাব উত্থাপন করি। সেটা হচ্ছে, ধর্ষণের শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড।’

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারা সংশোধন করা হচ্ছে, তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৯(৪) ধারায়ও পরিবর্তন আনা হয়েছে। আর সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একটি দ্বৈত বেঞ্চ নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১১ (গ) ধারায় যেখানে সাধারণ জখম অপরাধ আপসযোগ্য ছিল না, সেখানে আপসযোগ্য করার একটা নির্দেশ ছিল। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়েও কথা হয়। সেখানেও (সাধারণ জখম) সংশোধন করে আপসযোগ্য করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘১৯৭৪ সালের শিশু আইন নতুন করে ২০১৩ সালে সরকার সংসদে পাস করেছে। সেই আইনেরও আমরা সংশোধনী এনেছি। এই সব সংশোধনী আজকের মন্ত্রিসভার বৈঠকে উত্থাপন করেছিলাম। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভায় সংশোধনীগুলোর চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ভেটিং সাপেক্ষে।’

আনিসুল হক আরও বলেন, ‘যেহেতু সংসদে এখন সেশন নেই, সেহেতু প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, এটাকে অধ্যাদেশ করার জন্য। আমরা আগামীকাল (১৩ অক্টোবর) রাষ্ট্রপতির আদেশবলে এটাকে অধ্যাদেশ জারির প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

উল্লেখ্য, আজ সোমবার (১২ অক্টোবর) মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২০’ চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অধ্যাদেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি করা হয়েছে মৃত্যুদণ্ড। মামলা শুরু থেকে বিচার শেষ করতে হবে ছয় মাস বা ১৮০ দিনের মধ্যে। বিচারক বদলি হলেও মামলার ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সচিবালয়ে সীমিত আকারে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ কথা জানান।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘এই সংশোধনীর ফলে মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে ব্যাপক ক্যাম্পেইন হচ্ছে। এর ফলে একটি পজিটিভ ইমপ্যাক্ট পড়বে সাধারণ মানুষের মধ্যে। যারা এই ক্রাইমটি করবে তারা চিন্তা করবে এতে তো মৃত্যুদণ্ডের আদেশ রয়েছে।’

আরও পড়ুন- 

৬ মাসে শেষ করতে হবে ধর্ষণের বিচার, সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড